পাতা:সোনার তরী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-দ্বিতীয় সংস্করণ.pdf/৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমুদ্রের প্রতি । 이어 আর কিছু শেখে নাই। মনে হয়, যেন মনে পড়ে যখন বিলীন ভাবে ছিন্তু ওই বিরাট জঠরে অজাত ভুবন-ত্ৰণমাঝে,–লক্ষকোটি বর্ষ ধরে’ ওই তব অবিশ্রাম কলতান অন্তরে অস্তরে মুদ্রিত হইয়া গেছে ; সেই জন্ম-পূৰ্ব্বের স্মরণ,— গর্ভস্থ পৃথিবীপরে সেই নিত্য জীবনস্পন্দন তব মাতৃহৃদয়ের—অতি ক্ষীণ আভাসের মত জাগে যেন সমস্ত শিরায়, শুনি যবে নেত্র করি’ নত বসি জনশূন্ত তীরে ওই পুরাতন কলধ্বনি। দিক্ হতে দিগন্তরে যুগ হতে যুগান্তর গণি’ তখন আছিলে তুমি একাকিনী অখও আকুল আত্মহারা ; প্রথম গর্ভের মহা রহস্য বিপুল না বুঝিয়া ! দিবারাত্রি গৃঢ় এক মেহব্যাকুলত, গর্ভিণীর পূৰ্ব্বরাগ, অলক্ষিতে অপূৰ্ব্ব মমতা, অজ্ঞাত আকাঙ্ক্ষারাশি, নিঃসন্তান শূন্ত বক্ষোদেশে নিরন্তর উঠিত ব্যাকুলি’ । প্রতি প্রাতে উষা এসে অনুমান করি’ যেত মহা-সস্তানের জন্মদিন, নক্ষত্র রহিত চাহি নিশি নিশি নিমেষবিহীন শিশুহীন শয়ন-শিয়রে। সেই অাদি জননীর জনশূন্ত জীবশৃন্ত স্নেহচঞ্চলত সুগভীর, আসন্ন প্রতীক্ষাপূর্ণ সেই তব জাগ্রত বাসন, অগাধ প্রাণের তলে সেই তব অজানা বেদন অনাগত মহা ভবিষ্যৎ ফাগি, হৃদয়ে আমার যুগান্তর-স্মৃতিসম উদয় হতেছে বারম্বার।