শেফালি, গাঁথিতে মালা, ভুলে গিয়ে শেষে,
তরুতলে ফেলে দিয়ে আলুলিত কেশে
গভীর অরণ্য ছায়ে উদাসিনী হয়ে
বসে থাক; ঝিকিমিকি আলো ছায়া লয়ে
কম্পিত অঙ্গুলি দিয়ে বিকাল বেলায়
বসন বয়ন কর বকুল তলায়!
অবসন্ন দিবালোকে কোথা হতে ধীরে
ঘন পল্লবিত কুঞ্জে সরোবর তীরে
করুণ কপোত কণ্ঠে গাও মূলতান!
কখন্ অজ্ঞাতে আসি ছুঁয়ে যাও প্রাণ
সকৌতুকে; করি দাও হৃদয় বিকল,
অঞ্চল ধরিতে গেলে পালাও চঞ্চল
কলকণ্ঠে হাসি’, অসীম আকাঙ্ক্ষা রাশি
জাগাইয়া প্রাণে, দ্রুতপদে উপহাসি
মিলাইয়া যাও নভোনীলিমার মাঝে।
কখনো মগন হয়ে আছি যবে কাজে
স্খলিত-বসন তব শুভ্র রূপখানি
নগ্ন বিদ্যুতের আলো নয়নেতে হানি
চকিতে চমকি’ চলি যায়!—জানালায়
একেলা বসিয়া যবে আঁধার সন্ধ্যায়,—
মুখে হাত দিয়ে, মাতৃহীন বালকের
মত, বহুক্ষণ কাঁদি, স্নেহ আলোকের
তরে; ইচ্ছা করি, নিশার আঁধার স্রোতে
মুছে ফেলে দিয়ে যায় সৃষ্টিপট হতে
পাতা:সোনার তরী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১০৪
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
মানস-সুন্দরী।
৯৭