পাতা:সোনার তরী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৫২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পরশ-পাথর।
৪৫

বহুকাল দুঃখ সেবি নিরখিল, লক্ষ্মীদেবী
উদিলা জগৎমাঝে অতুল সুন্দর।
সেই সমুদ্রের তীরে শীর্ণদেহে জীর্ণচীরে
ক্ষ্যাপা খুঁজে’ খুঁজে’ ফিরে পরশ-পাথর!

এতদিনে বুঝি তার ঘুচে গেছে আশ।
খুঁজে’ খুঁজে’ ফিরে তবু বিশ্রাম না জানে কভু,
আশা গেছে, যায় নাই খোঁজার অভ্যাস।
বিরহী বিহঙ্গ ডাকে সারানিশি তরুশাখে,
যারে ডাকে তার দেখা পায় না অভাগা!
তবু ডাকে সারাদিন আশাহীন শ্রান্তিহীন
একমাত্র কাজ তার ডেকে ডেকে জাগা’।
আর সব কাজ ভুলি’ আকাশে তরঙ্গ তুলি’
সমুদ্র না জানি কারে চাহে অবিরত!
যত করে হায় হায়, কোন কালে নাহি পায়
তবু শূন্যে তোলে বাহু, ওই তার ব্রত।
কারে চাহি ব্যোমতলে গ্রহতারা লয়ে চলে,
অনন্ত সাধনা করে বিশ্বচরাচর!
সেই মত সিন্ধুতটে ধূলিমাখা দীর্ঘজটে
ক্ষ্যাপা খুঁজে খুঁজে ফিরে পরশ-পাথর!

একদা শুধাল তারে গ্রামবাসী ছেলে
“সন্ন্যাসীঠাকুর এ কি! কাঁকালে ওকিও দেখি!