পাতা:সোনার তরী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৯৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
মানস-সুন্দরী।
৮৯

কণ্ঠে জড়াইয়া দাও,—মৃণাল-পরশে
রোমাঞ্চ অঙ্কুরি উঠে মর্ম্মান্ত হরষে,—
কম্পিত চঞ্চল বক্ষ, চক্ষু ছলছল,
মুগ্ধ তনু মরি যায়, অন্তর কেবল
অঙ্গের সীমান্ত প্রান্তে উদ্ভাসিয়া উঠে,
এখনি ইন্দ্রিয়বন্ধ বুঝি টুটে টুটে!
অর্দ্ধেক অঞ্চল পাতি’ বসাও যতনে
পার্শ্বে তব; সুমধুর প্রিয় সম্বোধনে
ডাক মোরে, বল, প্রিয়, বল, প্রিয়তম;—
কুন্তল-আকুল মুখ বক্ষে রাখি মম
হৃদয়ের কানে কানে অতি মৃদু ভাষে
সঙ্গোপনে বলে’ যাও যাহা মুখে আসে
অর্থহারা ভাবে-ভরা ভাষা! অয়ি প্রিয়া,
চুম্বন মাগিব যবে, ঈষৎ হাসিয়া
বাঁকায়ো না গ্রীবাখানি, ফিয়ো না মুখ,
উজ্জ্বল রক্তিমবর্ণ সুধাপূর্ণ সুখ
রেখো ওষ্ঠাধরপুটে, ভক্ত ভৃঙ্গ তরে
সম্পূর্ণ চুম্বন এক, হাসি স্তরে স্তরে
সরস সুন্দর;—নবস্ফুট পুষ্পসম
হেলায়ে বঙ্কিম গ্রীবা বৃন্ত নিরুপম
মুখখানি তুলে’ ধোরো; আনন্দ আভায়
বড় বড় দুটি চক্ষু পল্লব-প্রচ্ছায়
রেখো মোর মুখপানে প্রশান্ত বিশ্বাসে,
নিতান্ত নির্ভরে! যদি চোখে জল আসে