পাতা:স্ত্রীস্বাধীনতা ও স্ত্রীশিক্ষা.pdf/১৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
(১০)

পরিতৃপ্তির জন্য জননীরূপ স্ত্রীজাতির সৃষ্টি হয় না। যেমন বৃক্ষের পুষ্প জগতের শোভার জন্য বা পুষ্পের ঘ্রাণ লইবার জন্য সৃষ্ট হয় নাই, তদ্রূপ জননীরূপা নারী-জাতির সৃষ্টি শোভার জন্য বা ইন্দ্রিয়পরিতৃপ্তির জন্য হয় নাই। যাঁহারা জ্ঞানী বা তত্ত্বদর্শী তাঁহারা ইন্দ্রিয়পরিতৃপ্তির জন্য পুষ্প আহরণ করেন না। তাঁহারা পুষ্প দেখিলেই পুষ্পের রূপে বা সৌরভে মুগ্ধ না হইয়া সেই পুষ্পের সূক্ষ্মতত্ত্বে প্রবেশ করিয়া পুষ্পের কারণ অনুসন্ধানে প্রবৃত্ত হন এবং দেখেন যে, তাহার মধ্যে সৃষ্টিকর্ত্তা সৃষ্টির জন্য বীজকোষ বিস্তার পূর্ব্বক বীজধারণের জন্য পুষ্পরূপে বা মাতৃরূপে বিরাজমান। পুষ্প যেমন ফল উৎপাদনের জন্য দণ্ডায়মান, জননীরূপা নারীজাতিও তদ্রূপ। যদি বলি কেবল সৃষ্টির অভিপ্রায়েই কি ভগবানের নারীরূপে আবির্ভাব? আর কিছু কি অভিপ্রায় নাই? আর এক মহৎ অভিপ্রায় আছে, তাহা মুক্তিলাভের সাহায্যের জন্য। যদি বলি মুক্তিলাভের জন্য স্ত্রীজাতি কি সাহায্য করিবে? বরং ইহাইত শুনিতে পাওয়া যায় যে, স্ত্রীজাতি মুক্তিপথের কণ্টকস্বরূপ এবং অনেক সাধুরাও এই বাক্য সমর্থন করিয়া থাকেন। বস্তুতঃ সাধুবেশধারী কতিপয় অজ্ঞানী লোকে এইরূপ অসার বাক্য প্রয়োগ করিয়া থাকেন বটে, কিন্তু তাহা অযৌক্তিক (যুক্তি বিরুদ্ধ)। তাহাতে কেবল ভগবানে দোষারোপ করা হয় মাত্র। ইহাতে মনে স্বতঃই এই প্রশ্নের উদয় হইতে পারে যে, যদি স্ত্রীজাতি মুক্তিপথের কণ্টক-স্বরূপ হয়, আর সেই মুক্তিই জীবের পরমপুরুষার্থ, হয় তবে সেই স্ত্রীজাতির সৃষ্টি হয় কেন? বা ভগবান্‌ স্ত্রীরূপ ধারণ করেন কেন? তাহা হইলে ত ভগবান্‌ আমাদিগকে বঞ্চনা