পাতা:স্ত্রীস্বাধীনতা ও স্ত্রীশিক্ষা.pdf/২০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
(১৬)

আমার কার্য্য দেখিয়া যেরূপ শিখিয়াছে, এখন আর কোন শিক্ষাতে তাহাদের সে সংস্কার পরিবর্ত্তিত হইবে না, যেহেতু তাহা বাল্যকালের সংস্কার হৃদয়ের অস্থিতে অস্থিতে এমন অঙ্কিত হইয়া গিয়াছে যে, তাই আর উঠিবার নয়। তাড়না বা উপস্থিত কালের শিক্ষায় তাহা যাইবার নহে। একারণ পূর্ব্বে বলা হইয়াছে পিতামাতার বিশেষ সাবধান হওয়া আবশ্যক, কারণ পিতামাতাই বালকবালিকাগণের পুস্তকস্বরূপ। পূর্ব্বকালে বালকগণ ৫ম বর্ষ পর্য্যন্ত পিতামাতার কার্য্য দেখিয়া শিক্ষাপ্রাপ্ত হইত। পরে গুরুগৃহে যাইয়া গুরুর নিকট হইতে বিদ্যাশিক্ষা করিয়া সর্ব্বশাস্ত্রবৎ হইত; সংসারাশ্রমে প্রবেশ করিয়া দারপরিগ্রহ করিত; অনন্তর সন্তান উৎপাদন করিয়া পুনর্ব্বার ব্রহ্মচিন্তায় মগ্ন হইয়া সমাধিস্থ হইত। এক্ষণে দেখা যাউক বালকগণ গুরুগৃহে যাইয়া যে বিদ্যাশিক্ষা করিত সে বিদ্যাই বা কি। বিদ্যা শব্দের প্রকৃত অর্থ জ্ঞান। জ্ঞান আবার কোন্‌ বিষয়ক জ্ঞান তাহা জানা উচিত। জ্ঞান দুই প্রকার—১ম আত্মবিষয়ক, ২য় ইন্দ্রিয়বিষয়ক। ইন্দ্রিয়বিষয়ক জ্ঞানকেই অবিদ্যা বোধে ত্যাগ করা উচিত। আত্মবিষয়ক জ্ঞান বা অধ্যাত্মবিদ্যাই মনুষ্যমাত্রেরই শিক্ষণীয়, কারণ এই অধ্যাত্মবিদ্যার প্রভাবে মনুষ্যের কোন নীতিই জানিতে বাকী থাকে না। রাজনীতি, সমাজনীতি, ধর্ম্মনীতি, সকল নীতিই অধ্যাত্মবিদ্যার অধীন। যেমন সূর্য্যের প্রকাশ হইলে আর অন্ধকার থাকে না, তদ্রূপ আত্মপ্রকাশে অর্থাৎ আত্মজ্ঞানের উদয়ে আর হৃদয়ে অন্ধকার থাকে না। একারণ আত্মবিদ্যাই বিদ্যা, আর সব অবিদ্যা। উক্তরূপ আত্মবিদ্যা পুঁথি বা পুস্তক পড়িলে