পাতা:স্বদেশ ও সাহিত্য-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আধুনিক সাহিত্যের কৈফিয়ৎ সে মরিয়াছে। তাহার মরার সম্বন্ধে আধুনিক লেখক ও পাঠকগণের যে আপত্তি আছে তাহ নয়। কিন্তু আগ্রহ ও নাই। বস্তুতঃ এ সম্বন্ধে আমরা অনেকট উদাসীন । পাপের শাস্তি না হইলে গ্রন্থ শিক্ষাপ্রদ হইবে না, অতএব শাস্তি চাই-ই। এই চাই-ই এর জন্য গ্রন্থকারকে যে অদ্ভুত উপায় অবলম্বন করিতে হইয়াছে, সেই থানেই আমদের বড় বাধা । তাহার গোবিন্দলালকে ভালোবাসিবার যে শক্তি সাধারণ নারীতে তাহা অসম্ভব,—উইল বদলাইতে সে কৃষ্ণকাস্তের মত বাঘের ঘরে ঢুকিয়াছিল—গোবিন্দলালের ভাল করিতে, ‘বারুণী’র জলতলে প্রাণ দিতে গিয়াছিল সে এমনিই প্রিয়তমের জন্য, আবার সেই রোহিণীই যখন কেবল মাত্র নীতিমূলক উপন্যাসের উপরোধেই অকারণে এবং এক মুহূর্তের দৃষ্টিপাতে সমস্ত ভুলিয়া, আর একজন অপরিচিত পুরুষকে গোবিন্দলালের অপেক্ষাও বহুগুণে সুন্দর দেখিয় প্রাণ দিল, তখন পুণ্যের জয় ও পাপের পরাজয় সপ্রমাণ করিয়া সাংসারিক লোকের সুশিক্ষার পথে হয়ত প্রভূত সাহায্য করা হইল, কিন্তু আধুনিক লেখক তাহাকে গ্রহণ করিতে পারিল না। রোহিণী পাপিষ্ঠ, এবং যে পাপিষ্ঠার প্রতি আমাদের কোন সহানুভূতি নাই, তাহারও প্রতি কিন্তু এত বড় অবিচার করিতে আমাদের হাত উঠে না । সে কাল ও একালে এখানেই মস্ত বড় ব্যবধান । বিধবা রোহিণীর দুর্ভাগ্য যে, সে গোবিন্দলালকে ভালোবাসিয়াছিল। তাহার দুবুদ্ধি, তাহার দুৰ্ব্বলতা,–কিন্তু পাপের সঙ্গে এক করিয়া, ইহাদের একত্রে ছাপ মারিয়া দিবার যখন অনুরোধ আসে তখন সে অনুরোধ রক্ষা করাকেই আমরা অকল্যাণ বলিয়া মনে করি । X రిఫి