সাহিত্য অ-পাঠ্য পুস্তক। তাই পড়বার ঠাই কোরে নিতে হোলে আমার বাড়ীর গোয়াল ঘরে । সেখানে আমি পড়ি, তারা শোনে। এখন আর পড়িনে, লিখি । সে গুলো কারা পড়ে জানিনে। এক ইস্কুলে বেশী দিন পড়লে বিদ্যে হয় না, মাষ্টার মশাই স্নেহবশে এই ইঙ্গিতটুকু দিলেন । অতএব আবার ফিরতে হোলো সহরে । বলা ভাল, এর পরে আর ইস্কুল বদলাবার প্রয়োজন হয়নি। এইবার খবর পেলাম বঙ্কিমচন্দ্রের গ্রন্থাবলীর । উপন্যাস সাহিত্যে এর পরেও যে কিছু আছে, তখন ভাবতেও পারতাম না । পড়ে পড়ে বইগুলো যেন মুখস্থ হয়ে গেল। বোধ হয় এ আমার একটা দোষ । অন্ধ অনুকরণের চেষ্টা না করেছি যে নয়। লেখার দিক দিয়ে সে গুলো একেবারে ব্যর্থ হয়েছে কিন্তু চেষ্টার দিক দিয়ে তার সঞ্চয় মনের মধ্যে আজও অনুভব করি । তারপরে এলো ‘বঙ্গদর্শনের নবপর্য্যায়ের যুগ। রবীন্দ্রনাথের 'চোখের বালি’ তখন ধারাবাহিক প্রকাশিত হচ্চে। ভাষা ও প্রকাশ ভঙ্গীর একটা নূতন আলো এসে যেন চোখে পড়লো। সে দিনের সেই গভীর ও স্বর্তীক্ষু আনন্দের স্মৃতি আমি কোন দিন ভুলবো না । কোন কিছু যে এমন করে বলা যায়, অপরের কল্পনার ছবিতে নিজের মনটাকে যে পাঠক এমন চোখ দিয়ে দেখতে চায়, এর পূৰ্ব্বে কখন স্বপ্নেও ভাবিনি। এতদিনে শুধু কেবল সাহিত্যের নয়, নিজেরও যেন, একটা পরিচয় পেলাম। অনেক পড়লেই যে তবে অনেক পাওয়া যায়, এ কথা সত্য নয়। ওই তো খানকয়েক পাতা, তার মধ্য দিয়ে যিনি এত বড় সম্পদ সেদিন আমাদের হাতে পৌছে দিলেন, র্তাকে কৃতজ্ঞতা জানাবার ভাষা পাওয়া যাবে কোথায় ? ጏ¢8
পাতা:স্বদেশ ও সাহিত্য-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৫৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।