স্বরাজ সাধনায় নারী আমি বলি মেয়ের বিয়ে দেবেন না । র্তারা চোখ কপাল তুলে বলেন, সে কি মশায় কন্যা দায় যে । আমি বলি, কন্যা যখন দায় তখন তার প্রতীকার আপনিই করুন, আমার মাথা গরম করার সময়ও নেই, বরের বাপকে নিরর্থক গালমন্দ করারও প্রবৃত্তি নেই। আসল কথা এই যে, বাঘের মুখে দাড়িয়ে, হাত জোড় করে তাকে বোষ্টম হ’তে অনুরোধ করায় ফল হয় বলেও যেমন আমার ভরসা হয় না, যে বরের বাপ কন্যাদায়ীর কান মুচড়ে টাকা আদায়ের আশা রাখে তাকেও দাতাকৰ্ণ হতে বলায় লাভ হ’বে বিশ্বাস করিনে। তার পায়ে ধরে’ও না, তাকে দাত খিচিয়েও না। আসল প্রতীকার মেয়ের বাপের হাতে, যে টাক দেবে তার হাতে। অধিকাংশ কন্যাদায়গ্রস্তই আমার কথা বোঝে না, কিন্তু কেউ কেউ বোঝেন । তারা মুখখানি মলিন করে’ বলেন,—সে কি করে’ হ’বে মশাই, সমাজ রয়েছে যে ! সমস্ত মেয়ের বাপ যদি এ কথা বলেন ত আমিও বলতে পারি, কিন্তু একা ত পারিনে ! কথাটা তার বিচক্ষণের মত শুনতে হয় বটে, আসল গলদও এইখানে। কারণ, পৃথিবীতে কোন সংস্কারই কখনও দল বেঁধে হয় না ! একাকীই দাড়াতে হয়। এর দুঃখ আছে। কিন্তু এই স্বেচ্ছাকৃত একাকীত্বের দুঃখ, একদিন সঙ্ঘবদ্ধ হ’য়ে বহুর কল্যাণকর হয়। মেয়েকে যে মানুষ বলে’ নেয়, কেবল মেয়ে বলে’, দায় বলে’, ভার বলে’ নেয় না, সে-ই কেবল এর দুঃখ বইতে পারে, অপরে পারে না। আর কেবল নেওয়াই নয়, মেয়ে মানুষকে মানুষ করার ভারও তারই উপরে এবং এখানেই পিতৃত্বের সত্যকার গৌরব । এ সব কথা আমি শুধু বলতে হয় বলেই বলছিনে ; সভায় দাড়িয়ে Ꮌ☾
পাতা:স্বদেশ ও সাহিত্য-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/২৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।