স্বদেশ তারই, আর কারও নয়,—পরাজিতের জন্য এমনি শিক্ষার ব্যবস্থা বিজেতা কি কখনও করতে পারে ? তার বিদ্যালয়, তার শিক্ষার বিধি সে কি নিজের সর্বনাশের জন্তেই তৈরী করিয়ে দেবে ? সে কেবলমাত্র এইটুকুই দিতে পারে যাতে তার নিজের কাজগুলি স্বশৃঙ্খলায় চলে। তার আদালতে বিচারের বহুমূল্য অভিনয় করতে উকীল, মোক্তার, মুন্সেফ, হুকুম মত জেলে দিতে ডেপুটি, সব ডেপুটি, ধরে আনতে থানায় ছোট বড় পিয়াদ, ইস্কুলে ডুবালের পিতৃভক্তির গল্প পড়াতে দুর্ভিক্ষ-পীড়িত মাষ্টার, কলেজে ভারতের হীনতা ও বর্বরতার লেকচার দিতে নখদন্তহীন প্রফেসার, অফিসে খাত লিখতে জীর্ণ শীর্ণ কেরাণী, —তার শিক্ষা বিধান এর বেশি দিতে পারে এও যে আশা করতে পারে সে যে পারে না কি আমি তাই শুধু ভাবি। অথচ কবি বলেছেন বঁচিবার বিদ্যা, কিম্বা মানুষ হ’বার বিদ্যা আছে কেবল শুক্রাচার্যের হাতে, আজ তার বাড়ী পশ্চিমে। সুতরাং মানুষ হ’তে যদি চাই তার আশ্রমে আজ আমাদের দৌড়াতেই হবে, “নান্তঃ পন্থা বিদ্যতে অয়নায়” । অমৃত-লোকের লোক হ’য়েও কচকে তার শিষ্যত্ব স্বীকার করতে হয়েছিল। হ’য়েছিল সত্য কিন্তু বিদ্যা ত কচ সহজে আদায় করতে পারেনি, গুরুদেবের ভোজ্য পদার্থ পৰ্য্যন্ত হ’তে হয়েছিল। কিন্তু দিনকাল এখন বলে গেছে—আমাদের দুরদৃষ্টে যদি গুরুদেবের ভোজনপৰ্ব্ব পর্য্যস্ত হ’য়েই নাটক সমাপ্ত হ’য়ে যায়, তামাসার বাকী আর কিছু থাকবে না। কিন্তু আমাদেরই বা এত দুঃখ, এত বেদনা কেন ? কবি বলেছেন, সেটা একেবারে নিছক আমাদের নিজেরই অপরাধ। আমি কিন্তু এই উক্তিটাকে পুরোপুরি স্বীকার করতে পারিনে। আমার মনে হয় Ψ) ο
পাতা:স্বদেশ ও সাহিত্য-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৩৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।