স্বদেশ আমদানির মূল শুকিয়ে যায় ত ভোজবাজির মত ওদের অস্তিত্ব এ দেশ থেকে উঠে যেতে বিলম্ব হ’বে না। ও সকল আমরা স্বষ্টি করিনি, কবৃতেও জানিনে। পরের কাছ থেকে বয়ে আনা। আজ ও সকল আমাদের না হ’লেও নয়, অথচ, ওর কোনটাই আমাদের যথার্থ প্রয়োজনের ভিতর দিয়ে গড়ে ওঠেনি। এই যে দেখা দেখি প্রয়োজন, ৭ যদি আমরা গড়তেও ন পারি, ছাড়তেও, ন পারি তা’ হ’লে দুষ্ট-ক্ষুধার মত ও কেবল আমাদের একদিকে প্রলুব্ধ এবং অন্যদিকে পীড়িতই করতে থাকবে। কিন্তু পশ্চিম ওদের সৃষ্টি করেচে নিজের গরজ থেকে । তাদের সভ্যতায় ও সকল চাই-ই চাই। ঐ যে বড় বড় মানোয়ারী জাহাজ, ওই যে গোলা-গুলি-কামান-বন্দুক-গ্যাসের নল, ওই যে উড়ো এবং ডুবে জাহাজ ও সমস্তই ওদের সভ্যতার অঙ্গ প্রত্যঙ্গ, তাই কোনটাই ওদের বোঝা নয়, তাই ওদের পরিণতি, ওদের নিত্য নব আবির্ভাব দেশের প্রতিভার ভিতর থেকেই বিকশিত হয়ে উঠুচে। দূর থেকে আমরা লোভ করতেও পারি, নিতান্ত নিরীহ গোছের বাবুয়ানীর সরঞ্জাম কিনেও আনতে পারি কিন্তু বাণিজ্য জাহাজই বল, আর মোটর গাড়ীই বল, যতক্ষণ না সে নিজেদের প্রয়োজনে, নিজের দেশে, নিজের “ জিনিষের মধ্যে দিয়ে জন্ম লাভ করে, ততক্ষণ যেমন করে’ এবং যত টাকা দিয়েই না তাদের সংগ্রহ করে আনি, সে আমাদের সত্যকারের ঐশ্বৰ্য্য নয়। তাই ম্যানচেষ্টারের স্বক্ষ বস্ত্র, গ্লাসগো লিনেন এবং মসলিন, স্কটল্যাণ্ডের পশমী শীতবস্ত্র,—তা সে আমাদের যত শীতই নিবারণ করুক এবং দেহের সৌন্দৰ্য্য বৃদ্ধি করুক, কোনটাই আমাদের যথার্থ সম্পদ নয়—নিছক আবর্জন । 8 o
পাতা:স্বদেশ ও সাহিত্য-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৪৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।