পাতা:স্বদেশ ও সাহিত্য-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্মৃতিকথা জেলের পাচীলে তাকে প্রণাম করিতেছি । একথা তিনি শুনিয়াছিলেন, আমি তাহাই স্মরণ করাইয়া দিয়া বলিলাম, এরা আপনাকে ছাড়িয়া দিবে কেন ? দুই চোখ র্তাহার ছল ছল করিয়া আসিল, কয়েক মুহূৰ্ত্ত তিনি আপনাকে সাম্‌লাইয়া লইয়া অন্য কথা পাড়িলেন। মিনিট ২০ পরে ডাক্তার দাসগুপ্ত ঘরের কোণ হইতে আমার মোটা লাঠিটা আনিয়া আমার হাতে দিলে তিনি হাসিয়া বলিলেন, ইঙ্গিতটা বুঝেছেন শরৎ বাৰু? এরা আমাদের একটুখানি গল্প করতেও দিতে চায় না। এ গল্পের আর আমাদের অবসর মিলিল না। লোক বলিতেছে, এত বড় দাতা, এতবড় ত্যাগী দেখি নাই। দান হাত পাতিয়া লওয়া যায়, ত্যাগ চোখে দেখা যায়, ইহা সহজে কাহারও দৃষ্টি এড়ায় না। কিন্তু হৃদয়ের নিগৃঢ় বৈরাগ্য? বাস্তবিক, সৰ্ব্বপ্রকার কৰ্ম্মের মধ্যেও এত বড় বৈরাগী আর আমি দেখি নাই – ঐশ্বর্ষ্যে যাহার প্রয়োজন ছিল না, ধন সম্পদের মূল্য যে কোন মতেই উপলব্ধি করিতে পারিল না, সে টাকাকড়ি দুই হাতে ছড়াইয়া ফেলিবে না ত ফেলিবে কে ? একদিন আমাকে বলিয়াছিলেন, লোক ভাবে, আমি-র্যক্তিবিশেষের প্রভাবে পড়িয়া ঝোকের মাথায় প্র্যাকটিস ছাড়িয়াছি। তাহারা জানে না যে, এ আমার বহুদিনের একান্ত বাসন, শুধু ত্যাগের ছল করিয়াই ত্যাগ করিয়াছি। ইচ্ছা ছিল, সামান্য কিছু টাকা হাতে রাখিব, কিন্তু এ যখন ভগবানের ইচ্ছা নহে, তখন এই আমার ভাল । কিন্তু এই বিরাট ত্যাগের নিভৃত অন্তরালে আর একজন আছেন —তিনি বাসস্তী দেবী । একদিন উৰ্ম্মিলা দেবী আমাকে বলিয়াছিলেন, দাদার এত বড় কাজের মধ্যে আর একজনের হাত নিঃশব্দে কাজ 8 업