পাতা:স্বদেশ ও সাহিত্য-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বদেশ গয় কংগ্রেস হইতে ফিরিয়া আভ্যন্তরিক মতভেদ ও মনোমালিন্তে যখন চারিদিক্ আমাদের মেঘাচ্ছন্ন হইয়া উঠিল, এই বাঙ্গলাদেশে ইংরাজী বাঙ্গল যতগুলি সংবাদপত্র আছে, প্রায় সকলেই কণ্ঠ মিলাইয়া সমস্বরে তাহার স্তবগান স্বরু করিয়া দিল, তখন একাকী তাহাকে ভারতের এক প্রান্ত হইতে অপর প্রান্ত পৰ্য্যন্ত যেমন করিয়া যুদ্ধ করিয়া বেড়াইতে দেখিয়াছি, জগতের ইতিহাসে বোধ করি, তাহার আর তুলনা নাই। এক দিন জিজ্ঞাসা করিয়াছিলাম, সংসারে কোন বিরুদ্ধ অবস্থাই কি আপনাকে দমাইতে পারে না ? দেশবন্ধু একটুখানি হাসিয়া বলিয়াছিলেন, তা’ হ’লে কি আর রক্ষা ছিল ? পরাধীনতার যে আগুন এই বুকের মাঝে অহৰ্নিশি জল্‌ছে, সে ত এক মুহূৰ্ত্তে আমাকে ভস্মসাৎ করে দিত । লোক নাই, অর্থ নাই, হাতে একখানা কাগজ নাই, অতি ছোট যাহারা, তাহারাও গালিগালাজ না করিয়া কথা কহে না, দেশবন্ধুর সে কি অবস্থা ! অর্থাভাবে আমরা অতিশয় অস্থির হইয়া উঠিতাম, শুধু অস্থির হইতেন না তিনি নিজে। একটা দিনের কথা মনে পড়ে। রাত্রি তখন নয়টাই হইবে কি দশট হইবে, বাহিরে জল পড়িতেছে, আর আমি, সুভাষ ও তিনি শিয়ালদহের কাছে এক বড়লোকের বৈঠকখানায় বসিয়া আছি কিছু টাকার আশায়। আমি অসহিষ্ণু হইয়৷ বলিয়া উঠিলাম, গরজ কি এক আপনারই ? দেশের লোক সাহায্য করতে যদি এতটাই বিমুখ হ’য়ে উঠে ত তবে থাক্ । মন্তব্য শুনিয়া বোধ হয় দেশবন্ধু মনে মনে ক্ষুন্ন হইলেন। বলিলেন, এ ঠিক নয় শরৎবাৰু। দোষ আমাদেরই, আমরাই কাজ করতে জানিনে, আমরাই তাদের কাছে আমাদের কথাটা বুঝিয়ে বলতে (to