স্বদেশ দেশবন্ধুর মুখ গম্ভীর হইয়া উঠিল। ক্ষণকাল স্থির থাকিয় ধীরে ধীরে বলিলেন, কত যে ক্ষতি হয়, সে আমার চেয়ে বেশী আর কে জানে ? কেউ যদি এর পথ করে দিতে পারে, ত আমি সকলের নীচে, সকলের তবে কাজ করতে রাজি আছি। কিন্তু ফাকি চলবে না, শরৎবাৰু। সে দিন তাহার মুখের উপর অকৃত্রিম উদ্বেগের যে লেখা পড়িয়াছিলাম, সে আর ভুলিবার নহে। বাহির হইতে যাহার র্তাহাকে যশের কঙাল বলিয়া প্রচার করে, তাহার না জানিয়া কত বড় অপরাধই না করে । আর ফাকি ? বাস্তবিক যে লোক র্তাহার সর্বস্ব দিয়াছে, বিনিময়ে সে ফাকি সহিবে কি করিয়া ? আর একটা কথা বলিবার আছে । কথাটা অপ্রীতিকর । সতর্কতা .ও অতি-বিজ্ঞতার দিক দিয়া একবার ভাবিয়াছিলাম বলিয়া কাজ নাই, কিন্তু পরে মনে হইয়াছে, তাহার স্মৃতির মর্য্যাদা ও সত্যের জন্য বলাই ভাল। এবার ফরিদপুরে কন্ফারেন্সে’ আমি যাই নাই, তথাকার সমস্ত খুটিনাটি আমি জানি না, কিন্তু ফিরিয়া আসিয়া অনেকে আমার কাছে এমন সকল মস্তব্য প্রকাশ করিয়াছে,—যাহা প্রিয় নহে, সাধু ও নহে । অধিকাংশই ক্ষোভের ব্যপার এবং দেশবন্ধুর সম্বন্ধে তাহা একেবারেই অসত্য । দেশের মধ্যে রেভোলিউসনারী ও গুপ্তসমিতির অস্তিত্বের জন্য কিছুকাল হইতে তিনি নানা দিক দিয়া নিজেকে বিপন্ন জ্ঞান করিতেছিলেন। তাহার মুস্কিল হইয়াছিল এই যে, স্বাধীনতার জন্য র্যাহারা বলি স্বরূপে নিজেদের প্রাণ উৎসর্গ করিয়াছেন, তাহাদের একান্তভাবে না ভালবাসাও তাহার পক্ষে যেমন অসম্ভব ছিল, তাহাদের প্রশ্ৰয় দেওয়াও (ነb”
পাতা:স্বদেশ ও সাহিত্য-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৬৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।