পাতা:স্বদেশ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নূতন ও পুরাতন S \O. আনা হয়েছিল । এখানে বহু উপদ্রবে তার সমাধি ভঙ্গ করাতে তার মৃত্যু হয়। আমাদের জাতীয় যোগনিদ্রাও তেমনি বাহিরের লোক বহু উপদ্রবে ভেঙে দিয়েছে। এখন অন্যান্য জাতির সঙ্গে তার অার কোনো প্রভেদ নেই, কেবল প্রভেদের মধ্যে এই যে, বহু দিন বহির্বিষয়ে নিরুদ্যম থেকে জীবনচেষ্টায় সে অনভ্যস্ত হয়ে গেছে। যোগের মধ্যে থেকে একেবারে গোলযোগের মধ্যে এসে পড়েছে । কিন্তু কী করা যাবে ! এখন উপস্থিতমত সাধারণ নিয়মে প্রচলিত প্রথায় আত্মরক্ষণর চেষ্টা করতে হবে । দীর্ঘ জটা ও নখ কেটে ফেলে নিয়মিত স্নানাহার-পূর্বক কথঞ্চিং বেশভূষা করে হস্তপদচালনায় প্রবৃত্ত হতে হবে। কিন্তু সম্প্রতি ব্যাপারটা এই রকম হয়েছে যে, আমরা জটা নখ কেটে ফেলেছি বটে, সংসারের মধ্যে প্রবেশ করে সমাজের লোকের সঙ্গে মিশতেও আরম্ভ করেছি, কিন্তু মনের ভাবের পরিবর্তন করতে পারি নি । এখনো আমরা বলি, আমাদের পিতৃপুরুষেরা শুদ্ধমাত্র হরীতকী সেবন করে নগ্নদেহে মহত্বলাভ করেছিলেন, অতএব আমাদের কাছে বেশভূষা আহারবিহার চালচলনের এত সমাদর কেন ? এই বলে আমরা ধুতির র্কোচাটা বিস্তার-পূর্বক পিঠের উপর তুলে দিয়ে দ্বারের সম্মুখে বসে কর্মক্ষেত্রের প্রতি অলস অনাসক্ত দৃষ্টিপাত-পূর্বক বায়ু সেবন করি। এটা আমাদের স্মরণ নেই যে, যোগাসনে যা পরম সম্মানাহঁ সমাজের মধ্যে তা বর্বরতা। প্রাণ না থাকলে দেহ যেমন অপবিত্র, ভাব না থাকলে বাহাকুষ্ঠানও তদ্রুপ । তোমার আমার মতো লোক যারা তপস্যাও করি নে, হবিষ্যও খাই নে, জুতো মোজা পরে ট্র্যামে চড়ে পান চিবোতে চিবোতে নিয়মিত আপিসে ইস্কুলে যাই ; যাদের আদ্যোপাস্ত তন্ন তন্ন করে দেখে কিছুতেই প্রতীতি হয় না, এরা দ্বিতীয় যাজ্ঞবল্ক্য বশিষ্ঠ গৌতম জরৎকারু