পাতা:স্বদেশ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেশীয় রাজ্য 8 ఫె রাজা যদি নিজের জোরে কেমব্রিজ-অক্সফোর্ডের নকল প্রতিমা গড়িয়া তোলেন, তবে তাহাতে আমাদের কতটুকুই-বা শ্রেয় আছে– আমরা গরিবের যোগ্য বিদ্যালয় যদি নিজে গড়িয়া তুলিতে পারি, তবে সেই আমাদের সম্পদ । যে ভালো অামার আয়ত্ত ভালো নহে সে ভালোকে ‘আমার’ মনে করাই মানুষের পক্ষে বিষম বিপদ । অল্প দিন হইল, একজন বাঙালি ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট দেশীয় রাজ্যশাসনের প্রতি নিতাস্ত অবজ্ঞাপ্রকাশ করিতেছিলেন ; তখন স্পষ্টই দেখিতে পাইলাম, তিনি মনে করিতেছিলেন, ব্রিটিশ রাজ্যের সুব্যবস্থা সমস্তই যেন তাহদেরই স্থব্যবস্থা । তিনি যে ভারবাহী মাত্র, তিনি যে যন্ত্রী নহেন, যন্ত্রের একট! সামান্ত অঙ্গ মাত্র, এ কথা যদি তাহার মনে থাকিত তবে দেশীয় রাজ্যব্যবস্থার প্রতি এমন স্পর্ধার সহিত অবজ্ঞাপ্রকাশ করিতে পারিতেন না । ব্রিটিশরাজ্যে আমরা যাহা পাইতেছি তাহা যে আমাদের নহে, এই সত্যটি ঠিকমত বুঝিয়া উঠা আমাদের পক্ষে কঠিন হইয়াছে, এই কারণেই আমরা রাজার নিকট হইতে ক্রমাগতই নূতন নূতন অধিকার প্রার্থনা করিতেছি এবং ভুলিয়া যাইতেছি— অধিকার পাওয়া এবং অধিকারী হওয়া একই কথা নহে । দেশীয় রাজ্যের ভুলত্রুটি-মন্দগতির মধ্যেও আমাদের সাত্বনার বিষয় এই যে, তাহাতে যেটুকু লাভ আছে তাহা বস্তুতই আমাদের নিজের লাভ । তাহ পরের স্কন্ধে চরিবার লাভ নহে, তাহণ নিজের পীয়ে চলিবার লাভ । এই কারণেই আমাদের বাংলাদেশের এই ক্ষুদ্র ত্রিপুররাজ্যের প্রতি উংস্থক দৃষ্টি না মেলিয়া আমি থাকিতে পারি না। এই কারণেই এখানকার রাজ্যব্যবস্থার মধ্যে যে-সকল অভাব ও বিন্ন দেখিতে পাই তাহাকে আমাদের সমস্ত বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য বলিয়া জ্ঞান করি । এই কারণে এখানকার রাজ্যশাসনের মধ্যে যদি কোনো অসম্পূর্ণতা বা শৃঙ্খলার অভাব দেখি তবে তাহা লইয়া স্পর্ধাপূর্বক আলোচনা করিতে 8 -