পাতা:স্বদেশ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

しアペ স্বদেশ চতুর্দিকে নানা রূপে অপব্যয় না করিয়া সেই শক্তিকে উদবোধিত করিয়া তোলাই আমাদের সমাজের কাজ ছিল। আমাদের সমাজে প্রবৃত্তিকে খর্ব করিয়া প্রত্যহই নিঃস্বার্থ মঙ্গলসাধনের যে ব্যবস্থা আছে তাহা ব্ৰহ্মলাভের সোপান বলিয়াই আমরা তাহা লইয়া গৌরব করি । বাসনাকে ছোটো করিলে আত্মাকেই বড়ো করা হয়, এইজন্যই আমরা বাসনা খর্ব করি সন্তোষ অনুভব করিবার জন্য নহে। যুরোপ মরিতে রাজি আছে তবু বাসনাকে ছোটো করিতে চায় না ; আমরাও মরিতে রাজি আছি তবু আত্মাকে তাহার চরম গতি, পরম সম্পদ হইতে বঞ্চিত করিয়া ছোটো করিতে চাই না। দুৰ্গতির দিনে ইহা আমরা বিস্তৃত হইয়াছি ; সেই সমাজ আমাদের এখনো আছে, কিন্তু তাহার ভিতর দিয়া ব্ৰহ্মাভিমুখী মোক্ষাভিমুখী বেগবতী স্রোতোধারা যেনাহং নামৃত। স্তাং কিমহং তেন কুর্যাম্ এই গান করিয়া ধাবিত হইতেছে না – মালা ছিল, তার ফুলগুলি গেছে— রয়েছে ডোর । সেইজন্য আমাদের এতদিনকার সমাজ আমাদিগকে বল দিতেছে না, গৌরব দিতেছে না, আধ্যাত্মিকতার দিকে আমাদিগকে অগ্রসর করিতেছে না, আমাদিগকে চতুদিকে প্রতিহত করিয়া রাখিয়াছে। এই সমাজের মহৎ উদ্দেশু যখন আমরা সচেতনভাবে বুঝিব, ইহাকে সম্পূর্ণ সফল করিবার জন্য যখন সচেষ্টভাবে উদ্যত হইব, তখনি মুহূর্তের মধ্যে বৃহৎ হইব, মুক্ত হইব, অমর হইব, জগতের মধ্যে আমাদের প্রতিষ্ঠা হইবে, প্রাচীন ভারতের তপোবনে ঋষিরা যে যজ্ঞ করিয়াছিলেন তাহা সফল হইবে, এবং পিতামহগণ আমাদের মধ্যে কৃতার্থ হইয়া আমাদিগকে অtশীর্বাদ করিবেন। আষাঢ় ১৩০৯