পাতা:স্বদেশ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধর্মবোধের দৃষ্টাস্ত S S) কিন্তু অন্তে তাহার নিষেধ মানিবে, সে কাহারো নিষেধ মানিবে না, যুরোপের এই ধর্ম। কোনো প্রয়োজন থাক্ বা না থাক, শুদ্ধমাত্র বিপদ লঙ্ঘন করিয়া বাহাদুরি করিলে যুরোপে এত বাহবা মিলে যে, অনেকের পক্ষে সে একটা প্রলোভন । যুরোপের বাহাদুর লোকেরা দেশে বিদেশে বিপদ সন্ধান করিয়া ফেরে। যে-কোনো উপায়ে হোক, লাসায় যে যুরোপীয় পদার্পণ করিবে সমাজে তাহার খ্যাতি-প্রতিপত্তির সীমা থাকিবে না । অতএব তুষারগিরি ও তিব্বতীয় নিষেধকে ফাকি দিয়া লাসায় যাইতে হইবে । ল্যাগুর-সাহেব কুমায়ুনে আলমোড়া হইতে যাত্রা আরম্ভ করিলেন। সঙ্গে এক হিন্দু চাকর অসিয়া জুটিল, তাহার নাম চন্দন সিং। কুমায়ুনের প্রান্তে তিব্বতের সীমানায় ব্রিটিশ রাজ্যে শোকা বলিয়া এক পাহাড়ি জাত অাছে । তিববতীদের ভয়ে ও উপদ্রবে তাহারণ কম্পমান । ব্রিটিশ রাজ তিববতীদের পীড়ন হইতে তাহাদিগকে রক্ষণ করিতে পারেন না বলিয়া ল্যাগুর-সাহেব বারংবার অণক্ষেপ প্রকাশ করিয়াছেন । সেই শোকাদের মধ্য হইতে সাহেবকে কুলিমজুর সংগ্ৰহ করিয়া লইতে হইবে । বহু কষ্টে ত্রিশজন কুলি জুটিল । ইহার পর হইতে যাত্রাকালে সাহেবের এক প্রধান চিন্তা ও চেষ্টা কিসে কুলির না পালায়। তাহদের পালাইবার যথেষ্ট কারণ ছিল । ল্যাগুর তাহার ভ্রমণবৃত্তান্তের পচিশ পরিচ্ছেদে লিথিয়াছেন, ‘এই বাহকদল যখন নিঃশবদ গম্ভীর ভাবে বোঝা পিঠে লইয়া করুণাজনক শ্বাসকষ্টের সহিত হাপাইতে হাপাইতে উচ্চ হইতে উচ্চে আরোহণ করিতেছিল তখন এই ভয় মনে হইতেছিল, ইহাদের মধ্যে কয়জনইবা কোনো কালে ফিরিয়া যাইতে পারিবে ।” আমাদের জিজ্ঞাস্ত এই যে, “এ শঙ্কা যখন তোমার মনে আছে তখন এই অনিচ্ছুক হতভাগ্যদিগকে মৃত্যুমুখে তাড়না করিয়া লইয়া যাওয়াকে