পাতা:স্বর্গীয় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর - রজনীকান্ত গুপ্ত.pdf/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

(২৩)

না। যখন,তাইার প্রভূত পরিমাণে অর্থাগম হয়, সমাজে অসাধারণ প্রতিপত্তি বদ্ধমূল হয়, দিগন্তব্যাপিনী মহীয়সী কীর্তির কথা লোকের মুখে মুখে পরিকীর্তিত হইতে থাকে, তখনও তিনি আপনাকে সামান্য দরিদ্র বলিয়াই পরিচিত করিতেন। উচ্চপদস্থ রাজপুরুষগণ—সমাজের ধনসম্পত্তিশালী সম্রান্ত ব্যক্তিগণ, সর্ব্বদা যাহার সম্মান করিতেন, যাহাকে দেখিলে অভ্যর্থনার জন্য অগ্রসর হইতেন; অনেক সময়ে তিনিই সামান্য মূদীর দোকানে বসিয়া, মুদীর সহিত আলাপ করিতেন, এবং দীন দুঃখীদিগকে আত্মীয় স্বজন বলিয়া আপনার কাছে বসাইতেন। একদা তিনি সম্রান্ত ব্যক্তি। গণের সহিত কোনও বাগানবাড়ীতে অবস্থিতি করিতেছিলেন, এমন সময়ে এক জন দ্বারবান্ ঘর্মাক্তকলেবরে উপস্থিত হইয়া, তাহাকে একখানি পত্র দিল। এরূপ স্থলে অনেকে হয় ত সামান্য দ্বারবানের দিকে দৃকপাত করেন না। কিন্তু দয়ার সাগর, পত্রবাহককে পরিশ্রান্ত ও প্রখর আতপতাপে অবসন্ন দেখিয়া স্থির থাকিতে পারিলেন না। তিনি শান্তিবিনোদন জন্য পত্রবাহককে সেই গৃহে বসাইলেন। তদীয় বন্ধুগণ ইহাতে সাতিশয় বিরক্তি প্রকাশ করিতে লাগিলেন। কিন্তু এইরূপ বিরক্তিতেও তাঁহার হৃদয়ে অনুদার ভাব বা অহঙ্কারের আবির্ভাব হইল না। একদা তিনি উপস্থিত প্রবন্ধলেখককে কথা প্রসঙ্গে বলিয়াছিলেন—“আমি এক দিন ইডেন সাহেবের (ইডেন সাহেব তখন গবর্ণমেণ্টের সেক্রেটরি বা অন্য কোনও উচ্চ পদে নিয়োজিত ছিলেন) সহিত বসিয়া আলাপ করিতেছিলাম। এমন সময়ে অন্য এক ব্যক্তি সাহেবের দর্শনার্থী হইয়া, আপনার নাম লিখিয়া পাঠাইলেন। সাহেব চাপরাসীকে বলিলেন—“বাবুকে বল, এখন ফুর্সুথ নাই। ইডেন সাহেবের কথা শুনিয়া, আমি স্থির থাকিতে পারিলাম না, তখনই