পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/১৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিচিত্র মিসেস ক্লাউডেন আবার কছিলেন—“একটি বাড়ীতে আমি কিরূপ অপ্রস্তুত হয়েছিলুম, শুনবেন ? তারা খালা পুরে জামাকে নানারূপ মেঠাই খেতে দিয়েছিলেন । আমার কাছেই একটি ছোট মেয়ে দাড়িয়ে ছিল ; কি কুবুদ্ধি হ’লে আমার, প্লেট থেকে তার হাতে একটি মেঠাই দিলুম। আমনি গিল্পী ঠাকরুণ চড়াস্বরে ব’লে উঠলেন, “করলেন কি মেমসাহেব ! ও সব ত ও খায় না –ফেলে দে, ফেলে দে –রাক্ষসী, অসুখ করবে।” ততক্ষণ মেয়েটি দিব্য ক’রে মেঠাইটির অদ্ধেক গালে পুরে দিয়েছে। বেীর ঘোমটার মধ্যে থেকে চোখ-টেপাটেপি করতে লাগলেন, একটা দাসী এসে বকৃতে বস্তুত তাকে টেনে নিয়ে গেল ; বেচারী কাদতে কঁাদতে চ’লে গেল, আমার আর অপ্রস্তুতের সীমা রইল না।” রাজা অপ্রস্তুত হইয়া বলিলেন, “মানুষে মামুষকে স্পর্শ করলে আচারভ্রষ্ট ধৰ্ম্মভ্রষ্ট হ’তে হয়— আমাদের মনের এই ষে সঙ্কীর্ণতা, এইটেই সৰ্ব্বপেক্ষ আমার শোচনীয় ব’লে মনে হয়। তা ছাড়া মেয়ে-পুরুষের মধ্যে এতে যেরূপ বর্ণবিভাগ স্বষ্টি হয়েছে, সেটাও বড় অদ্ভুত। কিন্তু আমার বিশ্বাস, বেশী দিন এ রকম থাকবে না।” মিসেস ক্লাউডেন কহিলেন, “শিক্ষার কালে এ সব নিশ্চয়ই চলে যাবে। কিন্তু আমি অনেক পুরুষের সঙ্গে কথা ক’রে দেখেছি—এখনও স্ত্রীশিক্ষার অবশ্যকতা তারা ঠিক উপলব্ধি করেন না । অনেকে ভাবেন–শিক্ষায় নারীস্বভাব বিকৃত হয়ে যায় । তাদের প্রাণে আর তেমন স্নেহমমতা থাকে না । কেহ কেহ আমার মুখের উপরেই বলেছেন, ভারত-রমণীর মত আমরা ভালবাসতে পারিনে, ত্যাগ স্বীকার করতে জানিনে ইত্যাদি ।” ক্লাউড়েন সাহেবের চুরুটটা প্রায় শেষ হইয়। আসিয়াছিল ; তিনি সেটা বাহিরে ছুড়িয়া ফেলিয়া বলিলেন, “ঠিকষ্ট ত বলেছে । আমি যদি আজ মরি— তুমি কাল নিশ্চয়ই আর একটা বিয়ে ক’রে বসবে।” পত্নী উত্তর করিলেন, আর তুমি ! fair exchange, no robbery.” “আমি ! By Jove! কক্ষনে না। আমি তোমায় ছবির সামনে kneel down ক’রে থাকব, দেখে নিও * রাজা হাসিতে হাসিতে বলিলেন, “দেখুন Mrs. Clowden, আমাদের কোন মেয়ে আপনাদের এইরূপ রসিকতা শুনলে shoked হতো।” সাহেব বলিলেন, “Good souls ! তোমরা る●● যদি তাদের মত হ’তে, তা হ’লে কোন স্বামী মরক্তে ভয় পেত না ।” মেমসাহেব বলিলেন—“ওর কথা শুনবেন না, রাজা, আমারাও good souls, আচ্ছা, ভাবুন দেখি আপনি, সমাজ আইনে ভারতরমণী নিগড়-বাধা ; ইচ্ছাতে হউক, অনিচ্ছাতে হউক, নিষ্ঠুর পশু স্বামীরও পদসেবা করা ছাড়া তাদের উপায় নেই। কিন্তু আমরা স্বাধীনভাবে উপার্জন করিতে পারি—আমাদের ডাইভোস অtছে—একাধিকবার বিবাহ আমাদের মধ্যে দোষের নয়—এ সত্ত্বেও আমাদের মেয়ের স্বামীর জন্ত কত সহ করে ? আপনার উপন্যাসে স্ত্রীলোকের ত্যাগস্বীকারের বিষয় যা পড়েন, তা একটুও বাড়ানো কখ৷ নগ্ন । মহারাণী ( আপনার মা ) শুনে আশ্চৰ্য্য হয়ে গেলেন যে, সব ছেলে-মেয়েগুলিকে বিলাত পাঠিয়ে আমি একল৷ আছি। কিন্তু তাদের মঙ্গল ভেবেই আমরা সে কষ্ট সহ করি । স্ত্রীজাতির মধ্যে কষ্ট-স্বীকার, আত্ম-বিসর্জন স্বাভাবিক, নইলে বিধাতার স্বষ্টি রক্ষা হয় না। শিক্ষাতে এ ভাব বাড়ে, কিন্তু কমে না।” ক্লাউডেন সাহেব বলিলেন—“Bravo! কিন্তু কোন পাদ্রী থাকলে তোমাকে contradict করতো, —আদমের অধঃপতন হয়েছিল কেন, বল দেখি ?" ক্লাউডেন-পত্নী সহাস্তে কহিলেন, “এই দেখুন, স্বাজা – সেই আদিকাল থেকেই মেয়েরা সহ ক’রে আসছে। নিজের দোষে স্বৰ্গচ্যুত হলেন আদম —দোষ পড়ল বেচারী ইভের ঘাড়ে ।” রাজা বলিলেন—“আমি ইভ হ’লে আদমজাতীয় জীবের ত্রিসীমা মাড়াতুম না।” মেমসাহেব বলিলেন, “তাতে ত আমাদের জীবনের উদ্দেশু সিদ্ধ হোত না । দোষের তাগ নিজে নিয়ে তাদের গুণগুলি ফুটিয়ে উজ্জ্বল ক’রে তোলাই ত আমাদের জীবনের কাজ ।” ক্লাউডেন সাহেব বলিলেন—“বড় বেশী রকম আত্মপ্রশংসা করছ, challenge করতে হোল দেখছি ।” রাজা বলিলেন—*Mr. Clowden, আত্মপ্রশংসা এ নয় ; মেয়েদের আদর্শ যা হওয়া উচিত, তাই ইনি বলছেন ; অন্ততঃ আমরা যে রকমটা চাই।” ক্লাউডেন সাহেব বলিলেন - *Very sorry for you ब्रोछ । अधि किरु किष्ट्रप्उद्दे cयरब्रट्नद्र कांक्ने ধ’রে চলতে রাজি নই।” মিসেস ক্লাউডেন এ কথায় আর কোন কথা না