পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/১৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$సి 8 বেজে উঠবে তুমি তাহার চরণ-নূপুরে – সে ষে স্মৃতির খেয়া বেয়ে চলে স্বপ্ন-নদীর পুরে । রাজা তালমান দিয়া চক্ষু বুজিয়া গানটি গাহিতে লাগিলেন, হাসি তন্ময় হইয়া শুনিতে লাগিল । রাজা যথন থামিয়া পড়িলেন, তখন ও সেই গীততান তাহার কর্ণে বাজিতেছিল ! ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ গৃহের কুহকবদ্ধ নীরবতা ভঙ্গ করিয়া হ্যামাচরণ প্রথমে কহিলেন, “এইবার তোমার পালা মা, অতিথি-সম্বন্ধন কর।” হাসি একেবারেই বাকিয়া বসিল, এত ভাল গানের পর অfর কি সে গাইতে পারে। সে বলিয়া উঠিল, “আমি আজ মোটেই গাইতে পারব না। রাত্রে ঠাণ্ড লেগে গলাটা একেবারেই ধ’রে গেছে।” কিন্তু দিদিমা, কুঞ্চলাল, শু্যামাচরণ ইহীদের সকলেরই ইচ্ছা হাসি গান গায় ; গান শিথিয়া হাসি যদি গান শুনাইবার এমন অবসর ছাড়িবে, তবে শিথিম্বাই বা লাভ কি ! পিতা বলিয়া উঠিলেন, “গীও হাসি, বলছেন উনি গাও।” হাসি দিদিমার পাশে অসিয়া বসিয়াছিল, তিনি অলক্ষ্যে, তাহাকে বেশ একটু টিপনি দিয়া মুক্ত স্বরে কহিলেন, “গাইতে আরম্ভ করলেই গলা খুলবে, দেমাক রাখ।” কিন্তু তথাপি হাসি চুপ করিয়া ত্বহিল, তাহীদের অজ্ঞা পালনের কোন লক্ষণষ্ট প্রকাশ পাইল না। তখন অতিথি অনুনয়কণ্ঠে কহিলেন,-- “আপনি ন গাইলে কিন্তু বড় দুঃখিত হব।” হাসি নত মুখ উন্নত করিয়া তাহার দিকে চাহিল। রাজা আবার বলিলেন, “নিশ্চয়ই আপনাকে গাইতে হবে, এত অনুরোধ অগ্রাহ করবেন আপনি ?” এই দৃঢ়তাপূর্ণঅনুনয়-বাক্য রাজাদেশের ন্যায় তাহার কর্ণে ধ্বনিত হইল। রাজ তক্ত হইতে উঠিয়া বলিলেন, “আপনি এই আসন গ্রহণ করুন।” হাসি বলিল, “ও তানপুরাট ত আমার নয়, ওস্তাদেয়। ছোট তানপুরাতেই আমি গাই।” রাজা নিজেই তখন দেয়াল হইতে ছোট তানপুরাটি খুলিয়া তক্তার এক ধারে রাখিলেন। হাসি दिमा बाँकTयjरग्र दौtब्र शैtब्र ठङांग्र ऐं★ब्र श्रांनिब्रां স্বর্ণকুমারী দেবীর গ্রন্থাবলী বসিল, বসিয়া অনবরত তানপুরাটার কান টিপিতে লাগিল। কিছুতেই যে আজ তাহ সুরে মিলিতে চায় না ! রাজা হাসিন্ধা নিজেই তখন তান পুরাটার মুর বাধিয়া দিলেন। হাসির হস্তে কিন্তু তবুও তাহার স্বর খুলিল না ; ম্যাও ম্যাও করিয়া সেটা কঁাদিতে লাগিল। এ কি জ্বালা ! কোনও গান ত মনে আসিতেছে না আজ ! দিদিমাকে জিজ্ঞাসা করিল, *বল না দিদিমা—কোনটি গাব ।” দিদিমা তাহার ধরণ-ধারণ দেখিয়া মনে মনে জলিতেছিলেন, কিন্তু সংযত ভাবেই কহিলেন, “সেই আগমনটা গাও ?” “কোন আগমনীটা ? মনে পড়ছে না ত ?” গুীমাচরণ হাসিয়া বলিলেন, “তবে আগমনী থাক, একটা বিসর্জনী গাও।” কোনও বিসর্জনী গীতও আজ তাহার মনে পড়িল না । কৃষ্ণলাল বলিলেন, “একটি ব্রহ্মসঙ্গীত গণও তবে । ‘প্রথম নাম ওঙ্কার’ গানটি জান ত }” হাসি ঘাড় নীড়িয়া জানাইয়া দিল যে, ”জানি না।” রাজা বলিলেন, “আপনি কি কোন জাতীয় সঙ্গীত জানেন ?” হাসি ইহার উত্তর না দিয়া হঠাৎ বলিয়া উঠিল, “আচ্ছ গচ্ছি, আমার মনে পড়েছে একটা গান !” বলিয়া গাইতে আরম্ভ করিল, আমার বীণা তোমার হাতে মধুর অতি সাজিছে! আমার বাণী তোমার গানে মধুর কিবা বাজিছে— দুই ছত্র গাইয়াই হাসি গান বন্ধ করিল ; কথাও অণর মনে পড়িল না, মুরটাও একেবারেই ভুলিয়া গেল, বিরস লজ্জিত ভাবে সে তানপূরী হইতে হাতটা সরাষ্টয়া লইল । রাজা কৃপাপরবশ হইয়া বলিলেন, “থাকৃ ; তবে আজ দেখছি দেবী সরস্বতা আমাদের প্রতি বিমুখ ।” বলিয়া রাজা গিলাকুঞ্চিত শুভ্র পিরাণের ক্ষুদ্র পকেট হইতে র্তাহার ঘড়ি বাহির করিয়া দেখিয়া বলিয়া উঠিলেন, "এ কি দশটা বেজে গেছে ! আমাকে ত আজ রাত ১১টার ট্রেণ ধরতে হবে। আর আপনারাও নিশ্চয়ই এখনো থান নি ; সে কথা ভুলে গিয়ে আত্মমুখেই বিহবল হয়ে আছি।” রাজা দিদিমার দিকে চাহিয়া এই কথা বলিলেন। দিদিমা শশব্যস্তে বলিয়া উঠিলেন, “সে কি কথা, বোসে বোসো, আমরা দেরীতেই খাই ।” রাজা দাড়াইয়া কহিলেন, “মাপ করবেন, উঠুন শুামাচরণ বাবু, বড় দেয়ী হয়ে গেছে।”