পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণলতা : ৯৪ ১০০ টাকা, আর ঐ রোমের ( গদাধর রমকে রোম বলিতেন ) ডাম এক টাকা ।” রমেশ কহিল, “তবে টাকা আনো ।” “আজিই ?” রমেশ । এখনিই । গদাধর । টা টো হবে না । রমেশ । তা না, হ’লে চলে কই । তোমার কাছে ব’লবো ভাই, তার দোষ কি ? কারণ, তোমার কথা সাক্ষীর মধ্যে গণ্য নয়। সকাল বেলা ঐ চিঠিটে শনে অবধি আমারও গা কপিছে । বলা যায় না, ফৌজদারির হ্যঙ্গাম, কোথা থেকে কোথায় যায়। আমার ইচ্ছা করছে, আমিই আগে প্রকাশ করি, তা হলে ত আমি বেচে যাব । হয়ত আমি বেচে যাব । হয় ত এত ক্ষণ ব’লে ফেলতাম, তা তোমার বিস্তর অনুরোধে বলি নাই । আর কেউ হ’লে আমি ছেড়ে কথা কইতাম না, কিন্তু তোমার সঙ্গে আলাদা কথা । তোমাকে ভাই, এত ভালবাসি বলেই বলি নাই । যদি এ বিপদে আর কেহ পড়তো, তা হ’লে কি আমি পাঁচ-শ টাকার কম ছাড়তাম ? তবে তুমি নিতান্ত আত্মীয় বলেই ১oo টাকায় সম্মত হয়েছি। যদি নন্দ পাই, তবে "পেটে খেলে পিঠে সয়” মনে ক’রে থাকি । কিন্ত নগদ না পেলে ভাই, বড় সুবিধা হবে বোধ হয় না । রমেশের কথা শুনিয়া গদাধরচন্দ্র পুনরায় মানবদনে বাটীর মধ্যে গেলেন। এবং ঘণ্টাখানেক পরে এক শত টাকা আনিয়া রমেশের হাতে গণিয়া দিলেন । রমেশ টাকা লইয়া থানায় গমন করিল। সপ্তবিংশ পরিচ্ছেদ বিধুভুষণের দেশে প্রত্যাগমন-সরলার ঋণ পরিশোধ ভাদ্র মাস। সন্ধ্যার প্রাক্কাল । টিপ টিপ করিয়া ব্যটি হইতেছে। পৰেবর সাত দিবস অনবরত ব্যটি হইয়াছে। রাস্তা কদ্দমময় । অধিকন্তু গাড়ীর চাকায় কাটিয়া গিয়া ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খাল হইয়াছে, সেগুলি জলে পরিপািণ । তাহার দুই পাবে মাত্তিকা উচ্চ হইয়া রহিয়াছে । অসাবধানতাপ্রযুক্ত তথায় পদপ্রক্ষেপ করিলে পিচকারির ন্যায় বেগে পৰিকল সলিল উঠিয়া সমুদায় বস্ত্রাদি নষ্ট করিয়া ফেলে। যেখানে রাস্তার ধারে বাক্ষাদি আছে, সেখানে শকে পত্র পড়িয়া জলসংযোগে পচিয়া দগন্ধ বিস্তার করিতেছে। গ্রামের মধ্যে প্রতি গহ হইতে ধম উঠিতেছে। গহন্থেরা বেলা থাকিতে থাকিতে বাহিরের কম সমাধা করিয়া ঘরের বার রন্ধ করিয়া প্রদীপ জ্যালিতেছে। ঝি"ঝি, মশা ইত্যাদি নানাবিধ কাঁট পতংগ উড়িতেছে, ভেককলে আনন্দে রব করিতেছে, ঝিলীগণের ককশ স্বরে কণে তালা লাগিতেছে । গাভী, ছাগ, মেষ প্রভৃতি গ্রাম্য জন্তু একটিও বাহিরে -নাই । মনষ্যের গতায়াত অনেক ক্ষণ বন্ধ হইয়াছে।