পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সপ্তবিংশ পরিচ্ছেদ : ৯৭ করিল। কোনই উত্তর নাই । বিধভাষণ কপালে করাঘাত করিয়া কহিলেন, সব্বনাশ হয়েছে।” নীলকমল পুনৰবার উচ্চৈঃস্বরে ডাকিল । এবার শ্যামা বাহিরে আসিয়া জিজ্ঞাসা করিল, "এত রাত্রে তোমরা কা’রা দরজায় ঘা দিচ্ছ ?” নীলকমল । বাহির হইয়া দেখ । শ্যামা দরজা খলিয়া দেখিল দুটি লোক । একটি দরজার ধারে বসিয়া, আর একটি দাঁড়াইয়া আছে। দেখিয়া পানবরি জিজ্ঞাসা করিল, “তোমরা কারা ? বিধভাষণ জিজ্ঞাসা করিলেন, “শ্যামা, তোমরা সব ভাল আছ ?” শ্যামা বিধভষেণের সবর জানিতে পারিয়া কম্পিত কলেবরে উচ্চৈঃস্বরে কহিল, “তুমি কোথা থেকে এলে ?" বিধভাষণ কহিলেন, “শ্যামা, স্থির হও । বাটীর সকলে ভাল আছে ?" শ্যামা একট বিলম্বে কহিল, “প্রাণে প্রাণে । তুমি কোথা থেকে এলে ?” বিধভষেণ শ্যামার কথা শুনিয়া “মা দগৈ”ি বলিয়া দীঘনিশ্বাস ত্যাগ করিলেন, “শ্যামা, আমি কোথা থেকে এলাম যে জিজ্ঞাসা করলে—আমার পত্র কি পাও নাই ?” শ্যামা কহিল, “তুমি বাড়ী ছাড়া অবধি পত্র পাওয়া দরে থাকক, কোন লোকের মুখেও তোমার খবর পাই নাই । খড়ী-মা ভেবে ভেবে প্রায় "এখন তখন" এমনি অবস্থা হয়েছে ।” বিধ । আর গোপাল-সে কেমন আছে ? শ্যামা । সে ভাল আছে । বিধ ৷ তবে চলো শ্যামা, বাড়ীর মধ্যে যাই । শ্যামা কহিল, "এখন বাড়ীর মধ্যে গেলে খড়ী-মা মচছাঁ যাবেন । তোমরা এইখানেই ব'সো, আমি আগে গিয়া তাঁকে বলি, তার পর তোমাদের নিয়ে যাব।" বিধ কহিলেন, “শ্যামা, সরলা কি এতই কাহিল হয়েছে যে, আমাদের বাড়ী আসার খবর শনে মচছা যাবে ?" শ্যামা । বড় কাহিল । বিধভষেণ শ্যামার নিকট সরলার অসুস্থতার খবর পাইয়া বড় অধিক কাতর হইলেন বোধ হইল না । তাঁহাকে এত ভালবাসেন যে, তাঁহার বিরহে কাহিল হইয়াছেন শনিয়া যেন বিধভষেণের দুঃখের মধ্যে কিঞ্চিৎ সখের উদয় হইল । যেন অন্ধকার রজনীতে মেঘাচ্ছন্ন আকাশে বিদ্যুৎ খেলিল । হায় ! ভাবিয়া ভাবিয়া সরলার যে যক্ষমারোগ হইয়াছে, বিধভষণ তা জানিতে পারিলেন না। প্রায় অন্ধ ঘণ্টা পরে শ্যামা আসিয়া বিধভষেণকে ডাকিয়া লইয়া গেল । বিধভষেণ সরলার গহের বার পয্যন্ত প্রায় হাসিতে হাসিতে গমন করিলেন বলিলে হয়। কিন্ত গহমধ্যে প্রবেশ করিয়াই তিনি বসিয়া পড়িলেন। সরলাকে আর চেনা যায় না, এরপ কুশা ; কিন্ত তথাপি বিধভষেণের নাম শুনিয়া তিনি

  • বশলিতা-৭