পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণলতা : ৯৮ বিছানায় উঠিয়া বসিয়াছেন । বিধভষেণকে দেখিয়া সাশ্রনয়নে হাসিতে হাসিতে কহিলেন, “এত দিনের পর কি দুঃখিনীকে মনে পড়েছে ?" বিধভাষণ কাঁদিতে কাঁদিতে কহিলেন, ‘সরলা, এত কাল তোমার নাম জপ ক'রে বেঁচেছিলাম। কিন্ত সবনেও ভাবি নাই যে, তোমাকে এরপে অবস্থায় দেখবো " সরলা হাসিয়া উত্তর করিলেন, “এখন ভালো হবো । কিন্তু আজ আর অধিক বসতে পারছি না, আমার মাথা ঘুরছে, সবsিগ শরীর অবশ হয়ে আসছে।” এই বলিয়া সরলা শয়ন করিলেন । শ্যামা নিকটে বসিয়া সরলার কেশ একত্র করিয়া বধিয়া দিল । রজনী প্রভাত হইলে সরলা প্রতাষে নিজে উঠিয়া বাহিরে আসিয়াছেন ; তদশনে শ্যামার যার-পর-নাই আহলাদ হইল। শ্যামা মনে করিল, ভাবিয়া ভাবিয়া সরলা এরপ কৃশ হইয়াছিলেন। সরলাকে সম্বোধন করিয়া কহিল, “খড়ী-মা, দেখ দিখি, আমি ত বলেছিলাম, খড়াঠাকর বাড়ী এলেই তোমার ব্যামো সব আরাম হয়ে যাবে।” সরলা কহিলেন, শ্যামা, তমি আমার লক্ষী মেয়ে, তুমি আমার অন্নপণে । তোমার কথা সত্যি হবে না ত কার কথা সত্যি হবে ?” সরলার কথা শুনিয়াই শ্যামা বাটী হইতে বাহির হইয়া গেল। শ্যামার মহৎ দোষ, সে নিজের প্রশংসা শুনিতে পারে না । আহা, শ্যামার পরকালে কি উপায় হবে ? “পথিবীসংশোধনী সভায়" যদি শ্যামা অন্ততঃ দু-দিন যাইতে পারিত, তাহা হইলে শ্যামার এর:প দম্প্রবত্তি থাকিত না । রজনীর প্রথম ভাগে চিন্তায় বিধভষণের নিদ্রা হয় নাই। শেষ রাত্রে একট: ঘম হইয়াছিল। এ জন্য, বিধভষণ সকালে উঠিতে পারেন নাই। শ্যামা পাকশাকের উদ্যোগ করিয়া দিয়াছে, এমন সময় বিধভষেণ শয্যা হইতে উঠিলেন । সরলা উঠিয়া বেড়াইতেছেন দেখিয়া বিধভষেণের আনন্দের আর সীমা রহিল না । সরলা অত্যন্ত কাহিল বটে, কিন্তু এরপে ভাবে বেড়াইতেছেন এবং এরপ প্রফলচিত্তে কথাবাৰ্ত্ত কহিতেছেন যে, সকলে দেখিয়া যার-পর-নাই আহ্লাদিত হইল । সরলা রন্ধন করিতে প্রস্তুত হইলেন, কিন্তু শ্যামা কোন মতেই তাঁহাকে রান্নাঘরে যাইতে দিবে না। সরলা বলিলেন, “আমি না রাঁদলে কে রদিবে শ্যামা ?” শ্যামা কহিল, “ঠাকরণদিদিকে ডেকে আনি।” সরলা কহিলেন, “শ্যামা, ঠাকরণদিদি কি আসবেন ?” শ্যামা। "খড়ী-মা, পয়সা হ’লে সকলই হয়। আমাদের ভাবনা কি ?” বতত শ্যামা যাহা বলিয়াছিল, তাহাই কায্যে’ পরিণত হইল। ঠাকরণেদিদি যেই শুনিলেন যে, বিধভষেণ অনেক টাকা লইয়া দেশে ফিরিয়া আসিয়াছেন, অমনি আর দ্বিতীয় কথা না কহিয়া চলিয়া আসিলেন। সরলাকে দেখিয়া