পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ত্রিংশ পরিচ্ছেদ : ১১৩ কানাইয়ের কথা শুনিয়া বাব টের পাইলেন-গোপাল আসিয়াছে । তখন কহিলেন, “চাকর বামুনের এত বাবয়ানা কেন ? বন্টি হয়েছে ব’লে কি খাওয়াদাওয়া হবে না ? আমি এমন বাব বামন চাই নে । কাল অবধি যেন অন্য জায়গায় চাকরির চেস্টা দেখে ।” গোপাল কিছু না বলিয়া বাটীর মধ্যে গেলেন । গিয়া দেখিলেন, শ্যামা সমদায় উদ্যোগ করিয়া বসিয়া আছে । গোপালকে দেখিয়া কহিল, “আজ কোথায় ছিলে, দেখ দেখি কত বকছে ?" শ্যামার নেত্রযুগল হইতে ধারা বহিতেছে । গোপাল কহিলেন, “দিদি, যে বাবটির কথা রোজ বলি, যাঁর বাড়ীতে অনেক বই আছে, আজ তাঁর বাড়ীর কাছে এসে ব্যটি হ’ল, আর আসতে পারলাম না, সেইখানে গিয়া দাঁড়ালাম । বাব এসে আমাকে ছাড়েন না, থরের মধ্যে নিয়ে গিয়ে জল খাওয়ালেন, আর এই ধতিখানা পরতে দিলেন । আসতে দিতে চান না, বিস্তর ব’লে ক’য়ে চলে এলাম। আসবার সময় এক জন চাকর দিয়ে লাঠন পাঠায়ে দিলেন । বাবটি যেমন দেখতে, তেমনি ভদ্র ।" শ্যামা গোপালের কথা শুনিয়া হষেৎিফল নেত্ৰে কহিল, “তিনি বেচে থাকন—আমার মাথায় যত চলে, এত প্রমাই তাঁর হউক।” “দিদি, তাঁর নাম কি জানিস ?” শ্যামা জিজ্ঞাসা করিল, “কি নাম ?” গোপাল উত্তর করিলেন, “আমার তাঁর নাম জানবার জন্যে বড় ইচ্ছা হ’ল, কিন্তু একে বড়মানুষ, তাতে আবার আমার চাইতে বয়সে বড়, জিজ্ঞাসা করতে ভরসা হয় না। তার পর একখান বই খলে দেখলাম, কিন্তু ভাবলাম, যদি আর এক জনের বই হয় । তার পর দখোনা তিনখানা খলে দেখলাম একই নামহেমচন্দ্র। বেশ নামটি, না দিদি ?" শ্যামা । হাঁ, কিন্তু নামে কি করে ; গণ থাকলে খারাপ নামও ভাল হয় । গোপাল । দিদি, তুমি যদি দেখ, তবে টের পাবে তিনি কেমন ভদ্র, আমাকে বলেছেন, আমার যখন যে বই দরকার হবে, আমাকে নিয়ে আসতে দেবেন । শ্যামা। আমাকে এক দিন দেখিয়ে দাও দেখি বাবটি কে ? তাঁদের বাড়ী পরিবার আছে ? গোপাল । না । ক্ষণকাল পরে গোপাল রধিতে রধিতে কহিলেন, দিদি, হাঁড়িতে একটা তেল দাও ।” শ্যামা । আর তেল নাই । গোপাল । আমার তেল আর নাই ? শ্যামা ! একটুখানি আছে, কিন্তু তা দিলে তুমি পড়বে কিসে ? প্রবণলতা-৮