পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ولا : [q.sچfةg* তৃতীয় পরিচ্ছেদ সোনাৰ গাছে মুক্তাব ফল সরলা মনোদুঃখে বাটী আসিলেন এবং নিয়মিত গহ-কম সমাপন করিয়া বিরলে বসিয়া বৈকালের ঘটনা মনে মনে পয্যালোচনা করিতে লাগিলেন। স্ত্রীলোকের বল বন্ধি সমুদায়ই স্বামী, কিন্তু সরলার সে বল বন্ধি না থাকার মধ্যে । বিধভষেণ সমস্ত দিনই পাড়ায় থাকিতেন । আহারের সময় কেবল বাটীতে পদাপণ করিতেন। গহকায’্য দেখিতেন না ; এক পয়সা উপাঙ্কজনের ক্ষমতা ছিল না । বাদ্য, গীত এবং তাস-পাশাতেই তাঁহার সময় অতিবাহিত হইত । কিন্তু তিনি যৎপরোনাতি ভ্রাতৃবৎসল ছিলেন। দাদার সহিত বিবাদ করা আর পিতার সহিত বিবাদ করা তিনি এক কথাই মনে করিতেন । লেখাপড়া দ্বারা যাহাদের সবভাব পরিমাজিত হয় নাই, তাহারা অত্যন্ত রাগী হইয়া উঠে । বিধরেও এ দোষটি ছিল । তিনি সামান্য কারণে রাগ করিতেন না বটে, কিন্তু একবার করিলে আর সে রাগ সহজে দরে হইত না । সরলা ভাবিতে লাগিলেন, বৈকালের ঘটনা তাঁহাকে বলা কৰ্ত্তব। কি না । বলিলে যে কোন বিশেষ উপকার হইবে, তাহার কোনই সম্ভাবনা ছিল না । কিন্তু আবার মনের দুঃখ ব্যক্ত না করিলেও চিত্তের সবচ্ছন্দতা জন্মে না। এই চিন্তা করিতেছেন, এমন সময় গোপাল আসিয়া উপস্থিত হইল । তাহাকে দেখিবা মাত্র সরলা অঞ্চল দ্বারা চক্ষ মুছিয়া ফেলিলেম । গোপাল জিজ্ঞাসা করিল, “মা, তুই কাঁদচিস কেন ?" সরলা কহিলেন, “কৈ কাঁদচি ?" “ঐ যে তোর চোখ দিয়ে জল পড়ছে ?" সরলা কহিলেন, “আমার পেট বাথা কচ্চে ।" গোপাল উত্তর করিল, “আমার পেট কামড়ালে শ্যামা যে ওষদ দেয়, তবে সেই ওষদ খাস না কেন ? যাই, আমি শ্যামাকে ডেকে দি, তার ওষদ খেলে সেরে যাবে ।" সরলা কহিলেন, “না না, শ্যামাকে ডাকতে হবে না ; আমার পেট ব্যথা কচ্ছে না ; আমার চোকে কি পড়েছে, তাই চোক দিয়া জল বেরচ্ছে ।" “তবে আয়, তোর চোকে ফর্ম দিয়ে দি, তা হ'লে বেরিয়ে যাবে এখন " এই বলিয়া গোপাল নিকটে আসিল । সরলা তাহাকে ক্লোড়ে লইয়া সতৃষ্ণ নয়নে তাহার মুখাবলোকন করিতে লাগিলেন । - নেহের কি চমৎকার গণ ! সরলা কাঁদিতেছিলেন কেন, গোপাল তাহার কিছু মাত্র অবগত ছিল না, কিন্তু মাতাকে কাঁদিতে দেখিয়া তাহার আপন চক্ষদ্বয় আদ্র হইয়া আসিল । সরলা গোপালের ছল ছল নেত্র নিরীক্ষণ করিয়া সমদায় দুঃখ বিস্মত হইলেন এবং তাহাকে কোলে লইয়া বাহিরে বেড়াইতে লাগিলেন ।