পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একত্রিংশ পরিচ্ছেদ শুীমার অভিপ্রায় জানা চাই হেমচন্দ্র গোপালকে বিদায় দিয়া রামকমার নামক চাকরকে ডাকিলেন । রামকমার বাটীর বহ কালের চাকর, হেমকে হইতে দেখিয়াছে, তাঁহাকে কোলে করিয়া মানুষ করিয়াছে, তাঁহাকে অপত্যনিবিশেষে স্নেহ করে ও প্রভর ন্যায় ভক্তি করে । কলিকাতায় রামকমার হেমের অভিভাবক-স্বরুপ থাকে, চাকর-স্বরপে নহে । যুবকেরা প্রায়ই “কত্তাদের” আমলের চাকরদিগের উপর বিরক্ত। কারণ, তাহারা প্রভকে প্রভর মতন দেখে না ; স্নেহের পাত্র-স্বরুপ জ্ঞান করে। তাহাদিগের উপর হািকম চলে না। যখন তাদের ইচ্ছা হয়, তখনি কাজ করে। কিন্তু রামকমার বন্ধ, তাহার কাজ করিবার সামথ নাই। কেহই তাহাকে কিছ: করিতে কহে না, সতরাং তাহার উপর কাহারও রাগ হইবার কারণ নাই । হেমের ডাক শুনিয়া রামকুমার কাছে আসিয়া তক্তাপোশের উপর বসিল । হেম জিজ্ঞাসিলেন, “রামকমার, যে ছেলেটি এসেছিল, তাকে দেখেছ ?" রামকমার । হাঁ, এই ত দেখলাম । হেম জিজ্ঞাসেলেন, “কেমন দেখলে ?” রামকমার উত্তর করিল, “দেখতে ত ভালই দেখলাম । বেশ শিষ্ট, শান্ত ; কিন্ত পেটে কি গণ আছে, তা আনি কেমন ক’রে জানতে পারবো ?” হেম একটা হাসিয়া কহিলেন, “রামকুমার, আমি সহজে কারকে ভাল বলতে চাও না।” রামকমার উত্তর করিল, “তোমারও যখন আমার মতন বয়স হবে, তখন তুমিও সহজে কারকে ভাল বলবে না। কিন্ত আমি ত নিন্দে করি নাই। ছেলেটির নাম কি ?” হেমবাব কহিলেন, “নাম ত জিজ্ঞাসা করি নাই । কিন্ত লেখাপড়ায় বেশ । কেমন মিষ্টি কথাগুলি, কেমন বিনয় !" এই কথা বলিয়া হেম রামকমারের মথের দিকে তাকাইলেন, রামকমারের অভিপ্রায় কি, জানিবার জন্য। রামকমার কথা কহিল না। একবার উদ্ধাধোভাবে মুখ নড়িল । হেমবাব কহিলেন, "রামকমার, ছেলেটি অতি কণ্টে আছে। এক বাসায় থেকে রোধে খেয়ে ইসকলে পড়তে হয়। দেখলে ছেলেটিকে গরিব লোকের ছেলে বোধ হয় না। হাত দুইটি কেমন নরম । বোধ হয়, কোন দৈব ঘটনায় দরিদ্র হয়েছে।” রামকুমার বিষাদিত মখে কহিল, “হবে ।" রামকমারের উত্তর হেমের নিকট বড় ভাল লাগিল না । গোপালের সহিত আলাপ করিয়া তাঁহার অবস্থার বিষয় অবগত হওয়া পয্যন্ত, হেমের ইচ্ছা হইয়াছে, গোপালকে আনিয়া নিজ বাটীতে রাখেন। কিন্ত এ প্রস্তাব রামকমারের মুখ