পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ত্ৰেয়ন্ত্রিংশ পরিচ্ছেদ ॥ ১২৩ মা নেই ; কিন্ত আমি ত কাঁদি না ।" এই বলিয়া বণলতা গোপালের হাত ধরিয়া কহিলেন, “গোপাল দাদা, চল যাই ঠাকুর দেখি গে। তোমাদের দেশে এমন ঠাকর হয় ?” - গোপাল কথা কহিলেন না । সবণ’লতা পনবার কহিলেন, "গোপাল দাদা শীঘ্ৰ চল না। আমি কি চলতে পার না ?” কিছ দ্যর আস্তে আস্তে গিয়ে গোপালের চক্ষের জল শকাইল, পরে একট হাসিয়া কহিলেন, "বণ, আমার এ কান্নার কথা দাদার কাছে ব’লো না।” স্বণ কহিলেন, “তবে আমি যে মা'র কথা বললাম, এও করি সঙ্গে ব’লো না।" গোপাল কহিলেন, “না, আমি বলবো না।" সবণ কহিলেন, “তবে আমিও বলবো না।” ত্রয়ন্ত্রিংশ পরিচ্ছেদ নূতন নুতন ভাব এই অবধি সবণলতার সহিত গোপালের এক গোপনীয় সম্বন্ধ সথাপিত হইল । গোপাল স্বভাবতই লাজক ; কিন্ত এই অবধি তাহার লজ্জা যেন সহস্ৰগণ বধি হইল। গোপাল আর অন্তঃপরে যান না। সৰবদাই বহি বাটীতে বসিয়া থাকেন। পবে পাবে সর্বদাই কথাবাৰ্ত্ত কহিতেন, কিন্তু এখন আর কথাবাৰ্ত্ত কহিতে ভালবাসেন না । যেখানে অধিক লোক জন বসিয়া থাকে, আস্তে আস্তে তথা হইতে গিয়া অন্য এক স্থানে বসেন। হেমচন্দ্র এক বৎসর পর বাটী আসিয়াছেন । এ-বাড়ী ও-বাড়ী যাইতেই তাঁহার দিন অতিবাহিত হইয়া যায়। যখন গোপালের সহিত সাক্ষাৎ হয়, গোপালের বিরস বদন দেখিয়া মনে করেন, গোপাল বাটীর ভাবনা ভাবিতেছে। হঠাৎ দুই এক দিবস গোপালের অজ্ঞাতসারে তাঁহার নিকট গিয়া তাঁহার চক্ষের জল দেখিলেন। দুই এক দিবস গোপালের সম্মখে দাঁড়াইয়া আছেন ; গোপাল জানিতে পারেন নাই । শব্দ করিলে চমকিয়া জিজ্ঞাসা করেন, "কে ও ?” এক দিবস হেম জিজ্ঞাসিলেন, “গোপাল, তুমি এমন হয়ে গেলে কেন ? তোমার কি কোন অসুখ হয়েছে ?" গোপাল উত্তর করিলেন “অনেক দিন বাবার কোন সমাচার পাই নাই, তিনি কেমন আছেন টের পেলাম না ।" হেমচন্দ্র, গোপাল যে তক্তাপোশে বসিয়াছিলেন, তাহার উপর উপবেশন করিয়া বলিলেন, “ভয় কি, তিনি ভাল আছেন । তুমি তাঁকে পত্র লিখেছ ?” গোপাল কহিলেন, “না।” হেমচন্দ্র বলিলেন, “তবে একখান পত্র লেখা উচিত ৷" এই বলিয়া কাগজ কলম আনিয়া পত্র লিখিতে প্রবৃত্ত হইলেন । খানিক লিখিয়া কহিলেন, “গোপাল