পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-স্বর্ণলতা : ১২৪ আমার লেখাটা ভাল বোধ হচ্ছে না ; হয় ত আমার হাতের পত্র পেয়ে তিনি মনে করবেন, তোমার কোন পীড়া হয়েছে, তাই তুমি লিখতে পারলে না। তুমিই পলখান লেখ ।” গোপাল পত্র লিখিলেন । চিঠির জবাব আসিল । বিধভষেণ লিখিয়াছেন, "আমি ভাল আছি, সে জন্য চিন্তা করিবে না । হেমবাব ও তোমার কশল সমাচার লিখিবে ।" আগে হেমবাবর নাম, পরে “তোমার কশেল সমাচার ।" হেমবাবরে তাহাতে বড় আহ্লাদ হইল । পিতার চিঠি পাইয়া গোপালের চিত্তও অপেক্ষাকৃত ভাল হইল । যে দিবস গোপাল ও সবণলতার পর্বে প্রকাশিত কথোপকথন হইয়া যায়, সেই অবধি সবণলতারও অন্তরে এক অভতপবে ভাবের উদয় হইল । সে কোন ভাব ? সবণলতা বলিতে পারে না, সে কোন ভাব । গোপালকে দেখিতে ইচ্ছা হয়, কিন্ত আর গোপালের কাছে যাইতে পারেন না। আর পর্বের মতন তাঁহার হাত ধরিয়া টানিয়া আনিবার ক্ষমতা হয় না, হেম অন্তঃপরে আসিলে যদি গোপাল সঙ্গে না থাকিতেন, তাহা হইলে সবণ’লতা পধেব পাবে জিজ্ঞাসা করিতেন, "দাদা, গোপাল দাদা কোথায় ?” কিন্ত এখন আর সে কথা জিজ্ঞাসা করিতে পারেন না । হেমকে দেখিলেই তাঁহার হৃদয় কম্পিত হয় । তাঁহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ আর কেহ আসিতেছে কি না, উকি মারিয়া দেখেন । যদি আর কাহাকে না দেখিতে পান, তবে দীঘ নিশ্বাস ছাড়িয়া কাষ"ান্তরে, কি স্থানান্তরে গমন করেন । গোপাল যখন হেমের সঙ্গে সঙ্গে আসিতেন, সবণলিত। আর সে দিকে নিরীক্ষণ করিতে পারিতেন না । দেবে তাঁহার ও গোপালের চারি চক্ষ একত্র মিলিত হইলে উভয়েই অন্য দিকে চাহিতেন। কিন্তু অন্য দিকে চাহিয়াও অধিক ক্ষণ থাকিতেন না । বৰ্ণলতা আর গোপালকে “গোপাল দাদা" বলিয়া সম্বোধন করেন না । নাম উল্লেখ দরে থাকক, কোন তৃতীয় ব্যক্তি উপস্থিত না থাকিলে গোপালের সহিত এক পথানে থাকেন না । হঠাৎ একাকিনী গোপালের সম্মখে পড়িলে তাঁহার মুখ চক্ষ হইতে যেন অগ্নিস্ফুলিংগ নিগত হয় । পড়াশনা বন্ধ হইয়াছে। পশতকে মন লাগে না ; গোপাল দাদাকে আর পড়িবার জন্য ডাকেন না। গোপাল দাদাকে না দেখিলে চিত্ত যার-পর-নাই চঞ্চল হয়, কিন্ত গোপাল সম্মখে থাকিলে তাহার মুখ পানে নিরীক্ষণ করিতে ভরসা হয় না। সবণলতা যেন হঠাৎ বালিকাবস্থা অতিক্ৰম করিয়া যৌবনে অধিরাঢ়া হইলেন । পবে যে সমস্ত আমোদ-প্রমোদে তাঁহার মন নিবষ্ট হইত, এক্ষণে তাহাতে ঘণা জম্মিল ; খেলা আর ভাল লাগে না। খেলিবার নাম শুনিলে তাঁহার হাসি পায়। ঠাকুরমার উপন্যাস আর সত্য বলিয়া বোধ হয় না। চিন্তাই যেন তাঁহার জীবনের প্রধান উদ্দেশ্য। - পজা অন্তে গোপাল ও হেম এক দিবস বসিয়া আছেন । বিপ্রদাস তথায়