পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ত্রয়ন্ত্রিংশ পরিচ্ছেদ : ১২৫ আসিলেন। কত্তাকে দেখিয়া তাঁহাদিগের কথা বন্ধ হইল। বিপ্রদাস হেমকে জিজ্ঞাসা করিলেন, "কলিকাতায় যাবার দিন স্থির করা হ’ল ?” হেম উত্তর করিলেন, “আপনি যে দিন স্থির করে দেবেন, সেই দিনই যাব।" বিপ্রদাস একট চাপ করিয়া থাকিয়া কহিলেন, "বণর ত আর বিবাহ না দিলে নয়, তার কি বলো দেখি ?” হেম । সে বিষয়ে আমি কি বলবো ? আপনার যে অভিপ্রায়, তাই হবে। এই কথায় গোপালের বোধ হইল, যেন তাহার মুখ হইতে অগ্নিসফলিগ বাহির হইতেছে। তথা হইতে উঠিয়া যাইবার জন্য গাত্ৰোখান করিলেন । বিপ্রদাস কহিলেন, “কোথা যাও বাবা ? বসো ব'সো, উঠে যাবার দরকার নাই ।” হেম কহিলেন, “না, গোপাল একট বেড়াক । ওর শরীর বড় ভাল নাই।" গোপাল কিছ: ক্ষণ হইয়া চলিয়া গেলেন । বিপ্রদাস কহিলেন, “তিন চার জায়গা থেকে প্রস্তাব এসেছে, কিন্তু আমার কোনটাই মনোমত হয় না। শ্রীরামপুরের কাছে একটি পান্ত আছে ; সে না-জানে লেখাপড়া, না তাকে দেখতে শুনতে ভাল ; কিন্তু ঠাকুর মহাশয়" ( বলি,া বিপ্রদাস গরচরণে প্রণাম করিলেন ) “সেইখানেই শুভ কাম করতে অনুরোধ করেছেন ৷ ” হেম উত্তর করিলেন, “সে পাত্র যদি ভাল না হয়, আর যদি লেখাপড়া না জানে, তা হ’লে সেখানে শুভ কম করা কোন মতেই উচিত নয়।” “আমিও ত বাপ তাই বলি” বিপ্রদাস কহিলেন । “আমিও ত তাই বলি। এই জন্যে আমি কোন জবাব দিই নাই, বলেছি—তোমার সঙ্গে পরামশ না ক’রে কোন কথা বলতে পারি না ।" হেম জিজ্ঞাসা করিলেন, “আর কোথা থেকে প্রস্তাব এসেছে ?” বিপ্রদাস । আরও দুই তিন স্থান হ'তে এসেছিল, কিন্তু আমি তাহদের জবাব দিয়েছি । কোনখনের পাত্রই ভাল বোধ হয় না । হেমচন্দ্র একটা বিলম্বে কহিলেন, "গোপালের সহিত বিবাহ দিলে হয় না ।" বিপ্রদাস । কোন গোপাল ? হেম । এই যে আমাদের গোপাল ; এই মাত্র উঠে গেল । বিপ্রদাস হেমের কথা শুনিয়া একটী চিন্তা করিলেন, পরে কহিলেন, “তুমি বলে না, ওদের অবস্থা নিতান্ত মন্দ ? পারটি মনোমত বটে। যেমন দেখতে শুনতে, তেমনি লেখা পড়া বোধ আছে । কিন্তু বড় গরিব ।" এই বলিয়া বিপ্রদাস একটু মুখ বাঁকাইলেন। হেমচন্দ্র উত্তর করিলেন, “আপনি সবণকে যে টাকা উইল ক’রে দিলেন, তা পেলে আর সবণের ভাবনা কি ? ঐ রেখে খেতে পারলে কত পরিষে বড়মানুষের ন্যায় চলতে পারবে। বিশেষ, রপে গণ ও ধন, তিনই একত্রে মেলা সুকঠিন।" বিপ্রদাস আবার ক্ষণকাল চিন্তা করিয়া কহিলেন, "তাও বটে । গোপাল