পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণলতা : ১২৬ কলনের সস্তান, স্বভাব ভাল । আজকাল অমন কলীন মেলা ভার।" এই বলিয়া একট চাপ করিয়া রহিলেন, কিন্তু অবিলম্বে পুনরায় কহিলেন, “তোমার প্রস্তাব সংগত বটে। আমি বিবেচনা করে দেখি ; কিছু বিষয়-আশয় থাকলে আর কথাই ছিল না অথাৎ সে-ই উৎকৃষ্ট হইত। কিন্তু তুমি যা বলে সে সত্য, তিনই এক স্থানে মেলে না।” এই বলিয়া বিপ্রদাস ভাবিতে ভাবিতে তথা হইতে উঠিয়া গেলেন । হেমও গোপালের অনুসন্ধানে গমন করিলেন । চতুস্ত্রিংশ পরিচ্ছেদ দায়মাল—কিন্তু ধরা পড়িল না গোপাল, হেমচন্দ্র ও বিপ্রদাসের নিকট হইতে বৈঠকখানার দিকে আসিলেন । দীন নয়নে গহে প্ৰবেশ করিয়া কাহাকে দেখিতে পাইলেন ? সবণ’লতাকে। সবণলতা সেখানে কি জন্যে আসিয়াছিলেন ? প্রাতঃকালে দরে হইতে গোপাল ও হেমকে দালানের বারাণ্ডায় দেখিতে পাইয়া সবৰ্ণলতা অনুসন্ধান করিতে লাগিলেন, তাঁহার পিতা কোথায় ? একট পরে তাঁহাকেও দালানের বারাডায় দেখিতে পাইলেন। সবণ’লতা মনে করিলেন, এক্ষণে তাঁহারা সত্বর তথা হইতে মথানান্তরে যাইবেন না। আস্তে আস্তে বৈঠকখানার দরজা দিয়া উকি মারিয়া দেখিলেন-কেহই নাই । কল্পিত হৃদয়ে বৈঠকখানায় প্রবেশ করিলেন । মনে মনে ভাবিলেন, কোন শব্দ করিব না, কিন্ত যত জিনিসপত্র, আজি যেন তাঁহার প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করিয়া দিবার জন্যই তাঁহার সম্মুখে পড়িতে লাগিল । একখানা চেয়ারের কাছ দিয়া যাইতে সেখানা পড়িয়া যাইবার জো হইল। সেখানাকে ধরিতে গিয়া একখানা পুস্তক মেজের উপর হইতে পুড়িয়া গেল । পুস্তকখানি তুলিয়া দেখিলেন, সেখানি মেঘনাদবধ কাব্য । প্রথমের সাদা পাঠায় সপণ্টাক্ষরে "গোপালচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়" লেখা রহিয়াছে । চেয়ারে বসিয়া একট পাসতকখানি সাদর নয়নে নিরীক্ষণ করিলেন। পরে আমেত আস্তে সেখানিকে মেজের উপর রাখিয়া বৈঠকখানার ধারে কাপড় রাখিবার আলনার নিকট গেলেন । আলনার উপর গোপালের ধতি ও চাদর রহিয়াছে । ধংিখানি ও চাদরখানি সবণলতার পিতা পাজার সময় গোপালকে দিয়াছিলেন। গোপাল সেইখানি পরিয়া ভাসান দেখিতে গিয়াছিল। সবণলতা তাহা জানেন। কিত হেমচন্দ্র কোন কাপড়খানি পরিয়া ভাসান দেখিতে গিয়াছিলেন, তাহা সবণের সমরণ নাই । গোপালের চাদরের এক পাব মাটিতে পড়িয়াছিল ; যত্নপবেক চাদরখানি তলিয়া রাখিলেন। পরক্ষণেই আবার সেখানিকে পাড়িলেন । পাড়িয়া নিজের গায়ে দিলেন । পরে অসফট বচনে কহিলেন, “এই রকম ক’রে গায়ে দিয়েছিলেন ।” যেই সবণ’লতার মুখ হইতে উল্লিখিত কথা নিঃসত হইল, অমনি তিনি