পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণলতা : ১৩০ অনেক দিন থাকে না । তোমাদের বাড়ী থেকে বাড়ী গেলাম । সেখানে এই গোলের সর্য হ’ল। তার পর যেখানে যাই, সেইখানেই এই গোল । দাদাঠাকুর, তুমি আমাকে বারণ করা অবধি আমি সে গানও গাই নে, তার কথাও কই নে, তব আমাকে লোকে ছাড়ে না ।” বিধ্যভাষণ বঝিতে পারিলেন, নীলকমল পামঅখির গানের উল্লেখ করিতেছে । তিনি আর কথা কহিলেন না। নীলকমল জিজ্ঞাসিল, "দাদাঠাকুর, এখন কোথায় গেলে বাঁচি, আমাকে বলে দাও।” বিধ্যভাষণ কহিলেন, “নীলকমল, তুমি খেপো কেন ? তাতেই ওরা খেপায় ।” নীলকমল । দাদাঠাকুর, ঐ কথা আমিও বলি যে, আমি খেপি কেন ? কিন্তু কথাটা শুনলে যেন আমার বন্ধি লোপ পায়, আমি যেন পাগল হই । নীলকমল কথাটা শুনিয়া যে পাগলের মত হয়, তাহা আর বলিবার সাপেক্ষ রহিল না। বিধ্যভাষণ তাহার চেহারা দেখিয়াই তাহা বুঝিতে পারিয়াছিলেন। সন্ধ্যা পয্যন্ত উভয়ে সেই দোকান-ঘরে বসিয়া রহিলেন । সন্ধ্যার পরে বিধ্যভাষণ কহিলেন, “নীলকমল, চল আমাদের বাসায় যাই । সেইখানে খেয়ে শয়ে থাকবে ।” নীলকমল । দাদাঠাকুর, আমার কি আর খাওয়া দাওয়া আছে ? বিধভষেণ । সে কি ? নীলকমল । আজ তিন দিন জলবিন্দও খাই নাই, তব খিদে নেই। নীলকমলের কাতরোক্তি শনিয়া বিধ্যভাষণ কহিলেন, “নীলকমল, তুমি এইখানে ব'সো, আমি এখনই খাবার আনি ।” নীলকমল । না না । চন্দ্রের আলোকে বিধ ভাষণ দেখিতে পাইলেন, নীলকমলের চক্ষ এই কথা কহিবার সময় ভয়ানক হইয়া আসিল । বিধুভুষণ বিস্তর সাতনাবাক্যের দ্বারা বাসা পয্যন্ত আনিলেন । বাহিরের ঘরে বসাইয়া নিজে কিঞ্চিৎ খাবার আনিবার জন্যে বাটীর মধ্যে আসিলেন ; কিন্ত ফিরিয়া গিয়া দেখেন, গহ শুন্য পড়িয়া আছে । নীলকমল নাই । এ-দিক ও-দিক অনুসন্ধান করিলেন, কোন পথানেই তাহাব উদ্দেশ পাইলেন না । বিধ্যভাষণ ডেপুটী বাবার সহিত যেরপে সাথে আছেন, বোধ হয় ইহার পবে তিনি কখনও এমন সখে কালযাপন করেন নাই। কিন্ত শশিভাষণ ঐশ্বৰ্য্যশালী হইয়া, অট্টালিকায় শয়ন করিয়া কেমন আছেন দেখা যাউক । রামসুন্দর বাবর ষড়যন্ত্রের ফল ফলিতে আরম্ভ হইয়াছে ; কত্রীঠাকরণ দরখাস্ত করিয়াছেন । মেজেটের সাহেব দরখাস্ত পাইয়া স্বয়ং অনুসন্ধান করিতে আসিয়াছেন । মেজেটের সাহেব বাবর বৈঠকখানায় প্রবেশ করিয়া দেখিলেন, বাব মাটিতে