পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষটত্রিংশ পরিচ্ছেদ : ১৩৫ গোপাল শ্যামার কথা শুনিয়া সবণ’লতাকে একখানি পত্র লিখিলেন । লবণ ! দাদার অত্যন্ত বসন্ত হইয়াছে । এত দিন তোমাদিগকে বলিতে দেন নাই । আদ্য প্রাতঃকাল অবধি তাঁহার এক রকম চৈতন্য নাই বলিলে হয় । ডাক্তার বলিয়াছেন, এখনও জীবনের আশা করা যাইতে পারে । যদি তোমরা আসিতে ইচ্ছা কর, তবে আসিবে, আমি ও শ্যাম যথাসাধ্য শশ্রষা করিতেছি । গ্ৰীগোপাল চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় { পত্র ডাকে পাঠাইয়া গোপালের চিত্তচাঞ্চল্য পৰবাপেক্ষা অনেক লাঘব হইল । কোন অনিষ্ট হইলে পাছে লোকে বলে, বিনা-চিকিৎসায় কিরা বিনা-যত্নে মারা পড়িয়াছে, এই ভয়ে তিনি প্রায় ম্নিয়মাণ হইয়াছিলেন । গোপাল নিয়তই হেমের বিছানার পাবে বসিয়া থাকেন। তাঁহার আহার নিদ্রা নাই । আর কাহাকেও হেমের নিকট রাগিয়া তাঁহার মন সবচ্ছদে থাকে না । হেম ওঠ নাড়িলেই তিনি টের পান—কোন দ্রব্য চাহিতেছেন । আর কেহই তাহা টের পায় না । গোপালের চিঠি পাইয়া সবণলতা ও তাঁহার পিতামহী যৎপরোনাসিত চিন্তিত হইলেন। গহে যা যেখানে ছিল, সেইখানেই রাখিয়া দুই জনে পলকী করিয়া রেলওয়ে টেশনে আসিলেন । কিন্ত কলিকাতার মধ্যে হেমের বাসা কোথায় তাহারা কেহই জানেন না। শ্রীরামপুরের নিকটে তাঁহাদিগের গরণ্ঠোকুরের বাড়ী। সবণের পিতামহী কহিলেন, “সবণ, চল আমরা প্রথমে গরিষ্ঠাকুরের বাড়ী যাই । আমি তাঁর বাড়ী চিনি । সেখান থেকে এক জন লোক সঙ্গে নিয়ে কলিকাতায় যাব ।” সবণ সম্মত হইলেন । উভয়ে টিকিট লইয়া বাপীয় শকটারোহণে সন্ধ্যার সময় গরষ্ঠাকুরের বাটী পে'ছিলেন । গর দেবের নাম শশাঙ্কশেখর মতিগিরি। তিনি বণলতার ও তাহার পিতামহীর আগমন শ্রবণ করিয়া আগ্রহ সহকারে বারে গিয়া তাঁহাদিগকে আনিলেন। সবণ’লতার পিতামহী সান্টাঙ্গে প্ৰণিপাত করিয়া কহিলেন, “গরদেব, হেমের অত্যন্ত পীড়া হয়েছে, জীবন সংশয় । তার বাসায় যাব । কিন্তু তার বাসা কোথায় তা জানি না এ জন্য আপনার এখানে এসেছি । এক জন চাকর যদি সঙ্গে দেন, তা হ’লে আমরা অনায়াসে বাসা অনুসন্ধান ক'রে নিতে পারি।” গরদেব কাঁহলেন, "চাকর দরকার কি, আমি নিজেই যেতে প্রস্তত আছি । কিন্তু পীড়াটা কি ? তহজন্য কিছ: দৈবকায্য করলে ভাল হয় না ?” সবণলতার পিতামহী কহিলেন, পীড়া বসন্ত । আপনার অভিপ্রায়ে যদি দৈব শান্তি করলে ভাল হয়, তাই করন। খরচপত্রের জন্য সংকুচিত হবেন না।” এই বলিয়া অঞ্চল হইতে একখানি ৫০ টাকার নোট খালিয়া দিলেন। গরণ্ঠোকর আলোকের নিকট গিয়া নোটখানি দশন করিলেন। আহলাদের