পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণলতা : ১৩৬ হাসি তাঁহার আর অধরে ধরে না, কিন্ত মনোগত ভাব গোপন করিয়া তাঁহাদিগের নিকট আসিয়া কহিলেন, “আচছা, আপাততঃ যা দিয়াছ, তাতেই ব্যয় সমাধা হবে কিন্ত সমস্ত স্বত্যয়ন যে ঐ খরচে হবে, তাহা আমার বোধ হয় না।” প্ৰবণের পিতামহী কহিলেন, “আপনি ঐ টাকায় আরম্ভ করন, এর পর যা লাগবে, তা দেওয়া বাবে ।” ঠাকর মহাশয় কহিলেন, “তা যেন হ’ল কিন্তু আজ রাত্রে তোমরা কি প্রকারে কলিকাতায় যাবে, আমি সিথর করতে পারছি না।” সবণ’লতার পিতামহী কহিলেন, “কেন, আর গাড়ী নাই ?” গরষ্ঠাকর উত্তর করিলেন, “না।" সবণ’লতার পিতামহী কহিলেন, “তবে একখানা নৌকা ভাড়া করিয়া দিন । আমাদের না গেলেই নয় ।” সবণ’লতার পিতামহীর আগ্রহাতিশয্য দশন করিয়া গরদেব গংগাতীরে এক জন লোক পাঠাইয়া দিলেন। একট পরে সে ফিরিয়া কহিল, “আজ নৌকা যাবে না ।” সবণলতা ও তাহার পিতামহী অগত্যা গরে দেবের আলয়ে সে রাত্রি যাপন করিলেন । পর-দিবস প্রাতঃকালে সায্য না উঠিতে উঠিতে উভয়ে শয্যা ত্যাগ করিয়া কলিকাতায় যাইবার জন্য প্রস্তত হইয়াছেন, ক্ষণকাল বিলবে শশাকশেখর গাত্ৰোখান করিলেন ; এবং শিষ্য বাড়ী আসিয়াছে বলিয়া, কপালময় গগামত্তিকার ফোঁটা কাটিয়া সবণলতা ও তদীয় পিতামহীর নিকট আসিয়া উপস্থিত হইলেন। গরষ্ঠাকরকে দশন পাইয়া বৰ্ণলতা ও তাঁহার পিতামহী উভয়ে সান্টাঙ্গে প্রণাম করিলেন । শশাঙ্কশেখর “দীঘর্ণয়রস্তু" বলিয়া উভয়কেই কলিকাতা যাইতে প্রস্তত দেখিয়া জিজ্ঞাসিলেন, “সবণের টীকা হয়েছে ?” সবণের পিতামহী উত্তর করিলেন, “আমাদের পর ষানক্রমে টীকা নাই । সবণের টীকা হয় নাই ।” গর;ঠাকর কহিলেন, "তবে সবণের কলিকাতায় যাওয়া আমার মতে উচিত বোধ হচ্ছে না।" সবণের পিতামহী কহিলেন, “আপনার যে অভিপ্রায়, আমরা সেই মতেই কাৰ্য্য করবো ।” k শশাঙ্কশেখর কহিলেন, “তবে সবণকে আমার বাটী রেখে তমি কলিকাতায় যাও । নচেৎ সবণেরও নিশ্চয় বসন্ত হবে ।” সবণলতার পিতামহী তাহাতে সম্মত হইলেন । বৰ্ণ কহিলেন, “আমি কলিকাতায় যাব, তাহাতে আমার বসন্ত হয়, তাও স্বীকার ” তাহার পিতামহী কহিলেন, "বণ, তোমার যাওয়া হয় না। প্রথমতঃ তোমার টীকা হয় নাই, দ্বিতীয়তঃ গরদেব নিষেধ করছেন। এ অবস্থায় তোমাকে কি ক'রে কলিকাতায় নিয়ে যাই?”