পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সপ্তক্রিংশ পরিচ্ছেদ : ১৪১ শশাঙ্ক কহিলেন, “পাত্রী হস্তগত করা আমার ভার রইল। টাকা হ'লে । বাঘের দন্দ পাওয়া যায়। তুমি খরচ করতে যদি কষ্ঠিত হও, সে দোষ তোমার । আমার হবে না । তোমার টাকা চাই আর সাহস চাই । আমার কৌশল চাই ।” হরিদাস । তা ত আমি বুঝি, কিন্ত তুমি কি কৌশলে মেয়েটিকে আনবে, বল দেখি ? তার পর অন্য সব কথা । শশাঙ্ক । আমার কথায় তোমার বিশ্বাস হ’ল না ? আমি বললাম, মেয়ে আনা আমার ভার রইল ; তুমি এখন টাকার কথা বল । হরিদাস । আগে আমি কন্যাটি দেখতে চাই, কিবা কি উপায়ে আনবে, তা শুনতে চাই, পরে যদি সগত বোধ হয়, তবে আমি এ কাজে প্রবৃত্ত হব । হরিদাস শশাঙ্কের প্রতিবাসী বলিয়া তাঁহার চরিত্র বঝিতেন । প্রবঞ্চনা করিয়া লোকের নিকট হইতে টাকা লওয়া শশাঙ্কের নিত্য কম । এই জন্যই তিনি এত সতকতাপবেক কথা কহিতেছিলেন । শশাঙ্ক উত্তর করিলেন, “আমি বলছি, তোমার মেয়ের জন্য ভাবনা নাই, তুমি টাকার কথা বল, তব তুমি শুনবে না । তুমি টাকার কথা কইলেই ত আর আমি পেলাম না। আগে বন্দোবস্ত কর । তুমি কন্যা দেখে আমাকে টাকা দিও ।” হরিদাস কহিলেন, "হাঁ, এ কথা সংগত বটে। কিন্ত টাকার কথা তুমিই বল। তোমার যা বিবেচনা হয়, আমি তাই দেবো।" শশাংক কহিলেন, “এ ত বাজারের দর নয়। এর ত মলা নাই । আমি যৎকিঞ্চিৎ পেলেই সাহায্য করবো ।” হরিদাস শশাঙ্কের কথায় ভলিবার লোক নন। যদি তাঁহার চরিত্র না জানিতেন, তাহা হইলে এমন কথা শুনিলে ভাবিতেন যে, যথাৰ্থ অলপ টাকায় শশাংক সম্মত হইবেন । কিন্ত গরদেবের চরিত্র জ্ঞাত ছিলেন বলিয়া তিনি ইহাতে হষিত হইলেন না। কেবল মাত্র বলিলেন, “তা বটেই ত।” শশাঙ্ক । তা বটেই ত ব’লে যে চপ করলে ? কাজের কথা কও । হরিদাস ভাবিয়া চিতিয়া কহিলেন, “শুভ কম সমাধা হ’লে আপনাকে এক হাজার টাকা দেবো।” এই বলিয়া শশাঙ্কের মুখের দিকে চাহিলেন । শশাঙ্ক হাসিয়া কহিলেন, “ভায়া, ঘুমিয়ে ঘামিয়ে স্বপ্ন দেখছি না কি ?” হরিদাস কহিলেন, “কেন কেন ?" শশাঙ্ক উত্তর করিলেন, “বলি, উইলখানায় কত টাকা আছে, তা জানা আছে ত ?” হরিদাস। উইলের টাকা আর জলের মাছ সমান। হাতে না আসলে বিশ্ববাস নাই। সেই টাকা পাব বলেই কি আমি এ বিবাহে এত যত্নবান হয়েছি মনে করলে ? শশাঙ্ক। না, তা মনে করবো কেন, তা মনে করবো কেন । কন্যাটির বিবাহ