পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণলতা : ১৪২ হচ্ছে না, কেউ গ্রহণ করতে চায় না, নানান দোষ আছে ; তাই তুমি অনগ্ৰহ ক’রে তোমার ছেলের সহিত বিবাহ দিতে চাচছ। চাতরীতে হরিদাস কম নন ; শশাঙ্ক ত সে বিদ্যায় বিশারদ। "শেয়ানে শেয়ানে কোলাকলি ।” হরিদাস কহিলেন, "না, তা নয়, তা নয় ।” শশাঙ্ক উত্তর করিলেন, “তাই বটে। মেয়েটির বিবাহ হচ্ছে না, তুমি কৃপা ক'রে ক্ষতি স্বীকার করে আপন পত্রের সহিত বিবাহ দিলে। আর আমি কন্যাটির পক্ষে একটা উপকার করবো ব'লে আমাকে এক হাজার টাকা পুরস্কার দিতে স্বীকার করছি । তুমি এক জন পরম দয়াবান দেশহিতৈষী মহাশয় ব্যক্তি কি না ?” হরিদাস বলিলেন, “আমি ঠাট্টা করেছিলাম।” শশাংক । তবে এখন ঠাট্টা ছেড়ে প্রকৃত কথা কও । হরিদাস । আপনাকে পাঁচ হাজার টাকা দেবো । শশাংক । এবারও ঠাট্ট হ’ল । একবার ঠাট্টা ছাড় না ? হরিদাস বলিলেন, “না, এবার ঠাট্টা করি নাই। মনে কর, পনের হাজার টাকার অধিক আর উইলে নাই। কিন্ত প্রথমতঃ এই চরি করে বিবাহ দিয়ে তা নিয়ে মোকদ্দমা করতে হবে ; পরে যদি উইলে কোন গোলমাল হয় যদি কেন ? হবেই নিশ্চয় । হেম কিছু সহজে পনের হাজার টাকা ছেড়ে দেবে না । তা নিরে কত মামলা মোকদ্দমা করতে হবে ; এ ছাড়া হাজার অন্য খরচ আছে । মনে কর দেখি, সে সব বাদ দিলে আমার কিছু থাকবে ? অগ্রপশ্চাৎ দেখতে হয় ।” শশাঙ্ক । তোমার মোকদ্দমা করতে হবে, আর আমি কি ফাঁকে যাব নাকি ? সে হেমও ইংরাজি ম্যান। সে গর; পরতে কেয়ার করে না । তাদের সঙ্গে দেখা করতে এখন ভয় হয়, পাছে প্রণাম না করে । সে কি আমাকে সহজে ছাড়বে ? তবে যদি পেটে খাই ত পিঠে সবে । আমি এক কথা বলে যাই, যদি অধোঁক দিতে পার, তবে এর মধ্যে আছি, নচেৎ না । হরিদাস । তা পারি নে । শশাঙ্ক । তবে আর ও-বিষয়ে কথা বলে ফল কি ? চল যাই ।—এই বলিয়া গাত্ৰোখান করিলেন ; হবিদাস তাঁহার হাত ধরিয়া বসাইলেন। "আচ্ছা, আমি এ বিষয়ে বিবেচনা করে কাল বলবো । এখন তুমি মেয়ে কেমন করে আনবে বল দেখি ?" শশাঙ্ক । মেয়ে আমার ঘরেই আছে । হরিদাস । না ? শশাঙ্ক । যথাথ’, আমি এই গংগাতীরে সন্ধ্যাবেলা কি মিথ্যা বলছি ? হরিদাস । যাবার সময় দেখাতে পারবে ? শশাঙ্ক । হাঁ, পারবো ।