পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণলতা : ১৫৪ কি আর এ বিবাহ দিতে দেবেন ? তাঁর যদি কোন অশুভ হ’ত, তা হ’লে ত আমি আমাদের হাতেই থাকতে, এত ব্যস্ত কখনই হতেম না ।"

  • বর্ণলতা দেখিলেন, শশাঙ্কের কথা সঙ্গতই বটে। তখন তিনি কহিলেন, “আমার অসম্মতিতে বিবাহ দিও না, দিও না, দিলে তোমার ভাল হবে না। আমি নিশ্চয়ই গলায় ফাঁসি দিয়ে মরবো।"

পাষণ্ড শশাংক কহিল, "এক বার সাত পাক দিয়ে দিলে তার পর তুমি বিষই খাও, আর গলায়ই ছরি দাও, আমার তাতে কোন ক্ষতি বন্ধি নাই ; আমার সঙ্গে তোমার সম্পক সাত পাক পয্যন্ত ।” এই বলিয়া শশাংক পর্বের ন্যায় হাসিল । সবণলতা শশাঙ্কের পা ধরিয়াছিলেন। শশাংক হে’ট হইয়া হস্ত স্বারা তাঁহার হস্ত ধরেন, এমন সময় সবণ উঠিয়া দৌড়িয়া গহের কোণে গিয়া আপনার অঞ্চল দ্বারা গলদেশ বন্ধনপবেক কহিলেন, “তুমি যেখানে দাঁড়ায়ে আছ, ওখান থেকে যদি এক পা আগে এস, তা হ’লে আমি ফাঁসি টেনে মরবো।” শশাংক কহিল, "বণ, তুমি ছেলেমানুষ, তাতেই এত জোর করছ । তোমার আর কি সাধ্য আছে, আমার হাত থেকে উৎধার হও । এই বেলা সহজে এস । লগ্ন উত্তীণ হয়ে যায় । তোমার বিবাহ এই রাত্রে দেবই দেবো, লগ্ন বাঁহভতে হ’লে ভবিষ্যতে তোমারই অমঙ্গল।" এই বলিয়া শশাঙ্ক এক পদ অগ্রসর হইল । স্বৰ্ণলতা কহিলেন, “এই টানলাম ফাঁসি । আমার মৃত্যুও যে, এমন বিবাহও সেই ।” এই বলিয়া ফাঁসি টানিবেন, এমন সময় বহি বাটী হইতে এক প্রকান্ড আলোক দেখা গেল। উভয়ে চমকিয়া সেই দিকে দটি করিলেন । আলোক মহত্তমধ্যে দশ দিক ব্যাপ্ত হইয়া পড়িল । শশাংক টের পাইল, তাহার বৃহৎ চণ্ডীমণ্ডপে আগন লাগিয়াছে । একচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ শশীর চক্ষু ফুটিল শশিভাষণ রামসন্দর বাবর বাটী হইতে নিজবাটী আগমন করিয়া প্রমদার নিকট সমদায় বৰ্ত্তাশত বণনা করিলেন। প্রমদা শনিয়া দুই চারি বার দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিলেন, কিন্ত কথা কহিলেন না। ক্ষণকাল নীরবে পতির নিকট বসিয়া থাকিয়া তথা হইতে যাইবার জন্য গাত্ৰোখান করিলেন । শশিভাষণ জিজ্ঞাসিলেন, “কোথায় যাও ? আমার কথা শুনে চুপ করলে যে ?" প্রমদা উত্তর করিলেন, “আমি আসি ” এই বলিয়া নীচে মায়ের নিকট আসিলেন । শশিভাষণের যাহা কিছু সম্পত্তি ছিল, সকলই প্রমদার নামে। প্রমদার নামে কাগজ, প্রমদার নামে বাটী, প্রমদার নামে জমি জমা । নগদ টাকাও প্রমদার কাছে। প্রমদা শশিভাষণকে বঝাইয়া দিয়াছিলেন, দীর নামে ধন রাখিলে সে ধনে কোন সরিকের অংশ থাকে না, দায় বিবাদের সময় সে বিষয় কেহ নিলাম