পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ : ১৫৭ থাকবে না। আজ যদি টাকাগুলি দি, আর কাল উনি পলিপোলাও যান, তবে, আমরা ভিক্ষে ক'রে বেড়াই আর কি ? তা হবে না। মা কি বলো তুমি ?” মাতার এক্ষণে দিঙনিণয় হইল ; এখন যতই চাবক মার, ততই দৌড়াইবেন। কহিলেন, “তার কি ভুল আছে ? আপনার পজি পথি পরেরে দিয়ে দৈবজ্ঞি বেড়ায় হাবাতে হয়ে । সে কাজে যেন আমার বংশের কেউ না যায় ।” পরামশ সিথর করিয়া প্রমদা শশিভুষণের নিকট আসিলেন। শশী জিজ্ঞাসিলেন, “কোথায় গিয়েছিলে ?" প্রমদা । ঐ একবার মার কাছে গিয়েছিলাম । তাঁর ব্যাম হয়েছে, তাই দেখে এলাম । শশী । এই টাকাগুলি দিতে হবে, তার কি ?—শশী অত্যন্ত কাতর সবরে কথাটি কহিলেন । প্রমদা উত্তর করিলেন, “যখন দিতে হয়, তখন দেওয়া যাবে।” শশিভাষণের আর অধিক কথা কহিতে সাহস হইল না । পরদিন প্রাতে রামসন্দের বাবা দই জন পেয়াদা সমভিব্যাহারে শশী বাবর বাটী আসিয়া শশী বাবকে ডাকিলেন। শশী নীচে আসিয়া রামসুন্দর বাবকে অভ্যর্থনা করিয়া বসাইলেন। রামসন্দের কহিলেন, “যদি কারকে কিছু দেবার ইচ্ছা থাকে, এই বেলা আমার কাছে দাও । নচেৎ আর সময় পাবে না । হিসাব বঝে নিতে সরকার থেকে একজন ম্যানেজার এসেছে । ঐ পেয়াদা তোমার তলবে এসেছে । এখন না দিলে কাছারিতে সকলই প্রকাশ হবে ।” শশিভাষণ এই কথা শুনিয়া উপরে সন্ত্রীর নিকট আসিয়া প্রমদাকে কহিলেন, “তবে দাও, সেই ক’খানা কাগজ দাও । আর যাতে হাজার টাকা হয়, এমন থানকতক গয়না দাও ।” প্রমদা কহিলেন, “এখনই না দিলে নয় ?” শশী । না । প্রমদা ক্ষণকাল নিস্তবধ থাকিয়া কহিলেন, "দিলে কিছ: লাভ হবে ?” শশী । আমি তা হ’লে বেচে যাব, নচেৎ আমাকে পলিপোলাও যেতে হবে । প্রমদা আবার খানিক নীরবে থাকিয়া কহিলেন, “টাকা দিলে কেমন ক’রে বেচে যাবে, আমি বুঝতে পারি না । আমার মনে নিচ্চে, টাকা দিলে টাকাও যাবে, তুমিও যাবে ।” শশিভূষণের তখন হৃৎকম্প উপস্থিত হইল । অতি কাতর স্বরে কহিলেন “আমিই যদি বাই, তবে আর আমার টাকা থেকে কি হবে ?" প্রমদা মুখখানি অধিার করিয়া কহিলেন, “তা হ’লে আমাদের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে খেতে হবে ; সে কি তোমার পক্ষে ভাল হবে ?" শশিভূষণের বক ফাটিয়া যাইবার উপক্ৰম হইয়াছে। প্যবাপেক্ষা বিনীত ভাবে প্রমদার কাছে বসিয়া কহিলেন, “তোমরা ভিক্ষা করবে কেন ? আমার