পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিচতারিংশ পরিচ্ছেদ : ১৬১ অনন্তর প্রমদার মাতা কাপড়ের মোট লইলেন, এবং প্রমদা একটি বড় হাতবাক্স লইয়া বাটীর বাহির হইলেন । রমেশ বাব তাঁহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ আসিয়া তাঁহাদিগকে বাটীর বাহিরে রাখিয়া গেলেন । বিপিন, কামিনী, দাস দাসী, সকলেই বাটীতে রহিল। প্রমদা নিজে পিত্রালয়ে গিয়া জিনিসপত্র রাখিয়া আসিবেন মানসে, দিন থাকিতেই নৌকা ভাড়া করিয়া রাখিয়াছিলেন । ঘাটে গিয়া দেখিলেন, নৌকা প্রতীক্ষা করিতেছে ; নিঃশব্দে দু-জনে নৌকায় উঠিলেন। নাবিকেরা নৌকা ছাড়িয়া দিল । কিয়দর গমন করিয়া সম্পধ্যাবধি যে ঝড় হইতেছিল, তাহার বেগ পৰবাপেক্ষা শতগণ প্রবল হইল। গগনমণ্ডল দেখিতে দেখিতে ঘোরতর ঘনঘটায় আবত হইল, দশ দিক অন্ধকার হইয়া গেল । তড় তড় শিলাবষণ হইতে লাগিল । ক্ষণে ক্ষণে বিদ্যুতের আলো চক্ষকে নিপীড়িত করিতে লাগিল। বহৎ বহৎ ব্যক্ষ সমুদায় উৎপাটিত হইতে লাগিল ৷ ভীষণ বজনিনাদ হইতে লাগিল ৷ শীতে শরীর জড়সড় হইয়া আসিল । পবনের গজ্জনে কণে তালা লাগিল। বাক্ষ হইতে রাশি রাশি বিহঙ্গম মরিয়া নদীতে পড়িল । বাটী ঘর সমুদায় দেখিতে দেখিতে সমভূম হইয়া গেল। প্রমদার নৌকা জলমগ্ন হইল। মহত্তমধ্যে হাহাকার উঠিয়া গেল । কেহই কাহাকে দেখিতে পায় না, কাহারও কথা কাহারও কণকহরে প্রবেশ করে না । নাবিকেরা সাঁতার দিয়া কলে উঠিল । প্রমদার মাতা কাপড়ের মোটে ভর দিয়া ভাসিতে ভাসিতে তীরে উত্তীণ হইলেন । প্রমদার বাক্স অত্যন্ত ভারী ছিল । বাক্স ত্যাগ করিয়া যাইতে পারেন না । জলে হাবডুব খাইতে লাগিলেন । ক্ৰমশঃ তাঁহার সবংিগ শিথিল হইয়া আসিল ; এবং তাঁহার হস্ত হইতে বাক্স খসিয়া জলমগ্ন হইল । পরক্ষণেই একটি প্রবল তরঙ্গ কত্তাক তিনি কলে নিক্ষিপ্ত হইলেন । দ্বিচহ্লারিংশ পরিচ্ছেদ "অসৎ কর্ষ্যের বিপরীত ফল” শশাংক চ"ডীমণ্ডপে আগুন লাগিয়াছে দেখিয়া চিত্রাপিতের ন্যায় ক্ষণকাল এক স্থানে দাঁড়াইয়া রহিল। পরে অগ্নি ও আলোকের বন্ধি দেখিয়া দৌড়িয়া সে দিকে গেল। সবণ’লতার গহে প্রবেশ করিবার সময় দ্বার খলিয়া চাবি সহ তালাটি চৌকাটের মাথায় আংটায় রাখিয়াছিল ; যাইবার সময় লইয়া যাইতে বিস্মত হইল। বৰ্ণলতাও জানালা দিয়া দেখিলেন, শশাঙ্কের চণ্ডীমণ্ডপ পড়িতেছে এবং তাহার পরক্ষণেই তাহার নিকটবত্তী আর একখানি ঘর জালিয়া উঠিল । দেখিয়া শনিয়া বণের অন্তর কপিতে লাগিল । হা হা করিয়া ঘর জলিতেছে, লোকজন কোলাহল করিয়া পলাইতেছে ; কেহ কাহারও অন্বেষণ করিবার অবকাশ নাই ! নিজ নিজ প্রাণ লইয়াই সকলে শশব্যস্ত। বর্ণ গহ হইতে নিম্প্রান্ত হইয়া প্রবণ"লতা-১১