পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১৭১

ত্রিচারিংশ পরিচ্ছেদ শেষ হলো হবে! যে রাত্রে প্রমদার নৌকা জলমগ্ন হইল, তাহার পরদিন প্রাতে তিনি উক্ত সংবাদ থানায় পাঠাইয়া দিলেন। হেড কনটেবল সেই সংবাদ প্রাপ্তি মাত্র কত্তব্যাকৰ্ত্তব্য সিথর করণাথে দারোগা বাবর নিকটে আসিলেন। দারোগা বাব তখন বেহ:স। পড় বড় নিবাস বহিতেছে, চক্ষ মুদ্রিত, ডাকিলে কথা নাই, হস্ত পদ অবশ । রমেশ বাবকে প্রশ্ন করিলে, রমেশ উত্তর দিলেন, তিনি কিছই জানেন না। তিনি খিড়কির দয়ারে পাহারায় ছিলেন, সকাল বেলা পাহারা বদলি হইয়া আসিয়া দেখিলেন, বাব: অজ্ঞান ও শনিলেন যে, বাড়ীর মধ্য হইতে লোক বাহির হইয়া গিয়াছে। পরে জানিতে পারিলেন, বাহির হইয়া যাইবার সময় তাহদের নৌকা ডবিয়াছে । হেড কনটেবল ও রমেশ, উভয়ে একত্র হইয়া দারোগ বাবর পদদ্বয় পঙ্খোনুপুংখ করিয়া দেখিতে লাগিলেন। কি জানি, সপঘিাতই বা হইয়াছে । কিন্ত তাহার কোন চিহ্ন দেখিতে পাইলেন না । শরীরে কোন আঘাতের দাগও নাই। কপালে একটা পরাতন দাগ মাত্র আছে। হঠাৎ রমেশ দারোগা বাবর মখের কাছে মুখ লইয়া গেলে তাঁহার বোধ হইল, যেন দারোগ বাবর নিশবাসে মদের গন্ধ নির্গত হইতেছে । তিনি হেড কনটেবলকে ডাকিয়া কহিলেন, “জনাদার সাহেব, আমার বোধ হচ্ছে যেন বাবর নিশবাসে মদের গন্ধ বেরচ্ছে ! আপনি একবার দেখনে দেখি ?" হেড কনটেবল দারোগা বাবর মুখের কাছে মুখ লইয়া গিয়া কহিলেন, “রমেশ, ঠিক ধরেছ।” রমেশ কহিলেন, “মহাশয়, আমরা পলিসের লোক কি না। কত ফদি ক’রে মকৰ্দমা আসকারা করতে পারি।" হেড কনটেবল কহিল, "তবে এখন উপায় ? এস, কেউ না টের পেতে পেতে বাবর মাথায় জল ঢেলে দেখি, তাতে আরাম হন কি না !" রমেশ কহিলেন, "মহাশয়, এটা কি ভাল কথা বল্লেন ? শেষে যদি ভদ্রাভদ্র হয়, তা হ’লে আমাদের ঘাড়ে ঝকি পড়বে। আমার মতে ডিপুটী কলেক্টর বাবর নিকট গিয়া এংলা দেওয়া উচিত।" হেড কনটেবল কহিল, "তা হ’লে বাবর চাকরির উপর দোষ পড়বে।" রমেশ উত্তর করিলেন, “যিনি যে কম করবেন, তিনিই তার ফলভোগ করবেন । ৯ আমরা ঘাড়ে ঝুকি রাখবো কেন ?" রমেশের মুখ কালির মত । কথা কহিতে ওঠাধর কপিত হইতেছে, কিন্ত হেড কনটেবলের সেরাপ হইতেছে না। উভয়ে ক্ষণকাল পরামর্শ করিয়া স্থির করিলেন, ডেপুটী বাবর কাছে খবর দেওয়াই উচিত। লোকজন আনিয়া দারোগা বাবকে তুলিয়া লইয়া যাইবার সময় তিনি যেখানে শইরা ছিলেন, তাহার নিকট একটা বোতল দেখা গেল । ঘ্ৰাণ লইয়া রমেশ কহিলেন, “বোধ হয় এই বোতলেই