পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণলতা : ১৬৬ মদ ছিল। বোতলটা আর কি হবে, ফেলে দি " হেড কনস্টেবল কহিল, "এমন কমাও করতে আছে ? ও বোতলটা চালানের সঙ্গেই পাঠাতে হবে। দেখি, ওর মধ্যে কিছু আছে কি না ?" হেড কনটেবলের কথা শুনিয়া রমেশ কম্পিতহস্তে বোতলটি উপড়ে করিলেন। ক্ষুদ্র ধারে একটী কাল জলের মতন জিনিস বোতল হইতে পড়িল । রমেশ কহিলেন, “কিছুই নাই।” হেড কনটেবল কহিলেন, “ঐ যে কি একট পড়লো, ওটক ফেল্পে কেন ? তুমি পলিসের লোক হয়ে এমন কাচা কাজ করলে ! দাও, বোতল আমার কাছে प्राG !" বোতলটি দেবার সময় রমেশের হাত ঠক ঠক করিয়া কপিয়া উঠিল। হেড কনটেবল বিস্মিত নেত্রে রমেশের মুখ পানে নিরীক্ষণ করিলেন। জিহবা দ্বারা ঠেটি ভিজাইয়া রমেশ কহিলেন, “কাল সমস্ত রাত জেগে যেন গা কপিছে। নান করে একটু ঘামাতে পারলে বাঁচি " তৎকালে হেড কনটেবলের মুখ দেখিলে বোধ হইতে পারিত যে, রমেশের কথায় তিনি সন্তুষ্ট হইলেন না। বরঞ্চ তাঁহার মনে বিলক্ষণ সন্দেহ উদয় হইল । রমেশ মুখ ফিরাইয়া রহিলেন । হেড কনস্টেবল দারোগাকে লইয়া ডেপুটী কলেক্টর বাবর নিকটে শোয়াইয়া বোতলটি তাহার নিকট রাখিলেন। ডেপুটী কলেক্টর উভয়কেই কৃষ্ণনগর চালান করিয়া দিয়া জমাদারকে নৌকা ডোবার তদারকের ভার দিলেন । জমাদার, রমেশ ও অন্যান্য কনটেবল সকলে একত্র হইয়া যে পথানে নৌকা ডবিয়াছিল, তথায় উপস্থিত হইয়া মাঝিদিগকে জলে ডুব দিয়া জিনিসপত্র তুলিতে কহিলেন । তাহারা বদ্যাদি ভিন্ন আর কিছুই পাইল না। তখন জমাদার আরও অন্যান্য লোকজন আনাইয়া নৌকা জল হইতে তলিলেন, কিন্ত তাহার মধ্যে প্রমদার বাক্স পাইলেন না। অনন্তর হেড কনস্টেবল, কি প্রকারে প্রমদা ও প্রমদার মাতা বাটী হইতে বাহির হইলেন, তাহার অনুসন্ধানাথ শশিভূষণের বাটীতে গমন করিলেন । গমন করিয়া প্রথমতঃ রমেশকে বৃত্তান্ত জিজ্ঞাসা করিলেন। রমেশ কিছুই জানেন না । তিনি খিড়কিতে পাহারায় ছিলেন । সে দিক হইতে কেহই বাহির হয় নাই। পরে হেড কনস্টেবল গদাধরের জননীকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “আপনাদের কাল রাত্রে কে ছেড়ে দিয়েছিল ?" গদাধরের জননী উত্তর করিলেন, "যে আমার জামায়ের বাড়ী কাল চৌকি मृिछिळ ।” “তার নাম কি ?" গদাধরের জননী উত্তর করিলেন, “তার নামটি বেশ, ঐ যে আমাদের বাটী আসতো, আমার গদাধরচন্দুের সঙ্গে যার বড় প্রণয় ছিল । তার পর যে গদাধরচন্দুের সর্বনাশ করে টাকাও নিলে, মেয়াদও দিলে ।”