পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ত্ৰিচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ : ১৬৭ হেড কনটেবল কহিলেন, “আপনি তাকে দেখলে চিনতে পারবেন ?" গদাধরের জননী কহিলেন, “তা কেন পারবো না ?" পনরায় হেড কনটেবল জিজ্ঞাসিলেন, “গদাধরের কাছ থেকে কে সব নাশ ক’রে টাকা নিলে ?” গদাধরের জননী কহিলেন, “গদাধর আর সে, দু-জনে কার চিঠি খালে টাকা নিত । আমার ছেলের কোন দোষ ছিল না। সেই পাহারাওয়ালাই আমার ছেলেকে শিখায়ে দেয় । তার পর যখন এর অনুসন্ধান হ’ল, তখন এক দিন এসে বল্লে, আমাকে ১০০ টাকা দাও, না দিলে আমি সব বলে দেবো । কি করি বাব, আমি গরিব মানুষ, টাকা কোথায় পাবো। আমার জামাই বড়মানুষ, কিন্তু তা বলে ত আমি বড়মানুষের মাগ নই ; আমার যে দু-একখানা গয়না ছিল, আমার মেয়ের কাছে বন্দক রেখে টাকা দিলাম, কিন্ত আবার তার পরদিন সেই পাহারাওয়ালা দারোগাকে ডেকে এনে গদাধরকে ধরিয়ে দিল ।” প্রমদার মাতা এত দর বলিয়াছেন, এমন সময়ে রমেশ, কায্যতির হইতে আসিয়া তথায় উপস্থিত হইলেন । গদাধরের জননী তাঁহাকে দেখিয়া কহিলেন, "পাহারাওয়ালা, তোমাকে ব্যথা টাকা দিলাম । দেখ, আমার প্রমদার তাও গেল, বাকি যা ছিল, তাও গেল।" হেড কনটেবল পুনরায় জিজ্ঞাসিলেন, “কা’কে টাকা দিয়েছিলেন ?" গদাধরের জননী রমেশের দিকে অঙ্গলি নিদেশ করিয়া দেখাইয়া দিলেন । রমেশ বিসময় ভান করিয়া কহিল, “তুমি কি আমাকে টাকা দিয়েছিলে ?" গদা জননী । তোমাকেই ত । রমেশ । না, তুমি ভালেছ । গদাধরের জননী কহিলেন, “কেন বাপ মিথ্যা কথা কও ? আমি কি তোমাকে চিনি নে ? তুমি একবার গদাধরের কাছ থেকে একশ টাকা নিলে, কাল আবার আমার মেয়ে তোমাকে ২৫ টাকা দেন । আমি তোমাকে বেশ চিনি । আর চিনবোই বা না কেন ? এক বার দু-বার ত দেখা না । গদাধরের সঙ্গে তোমার কতই ভাব ছিল । তুমি রোজই আমাদের বাড়ী আসতে।” এই কথা শুনিয়া রমেশ আর কথা কহিতে পারিল না । হেড কনটেবলের মনেও আর সন্দেহ রহিল না । অবিলম্বে তিনি রমেশকে বন্ধন করিয়া চালান দিলেন। রমেশ তথাপি একবার কহিল, "দেখবেন মহাশয়, আমার কিন্তু কোন দোষ নাই । আপনাকে এর ফল ভগতে হবে । আমাকে চাষা মনে করবেন না। আমি পলিসের লোক ।” হেড কনটেবল কহিলেন, “তুমি পলিসের লোক, আর আমি কি পলিসের কেউ নই?” এই বলিয়া একখানি কাগজে চালান লিখিয়া আর দুই জন কনটেবলের হাতে রমেশকে সমপণ করিলেন । দীনবন্ধ বাব: তিন দিবস নিদ্রার পর গাত্ৰোখান করিলেন । ডাক্তার সাহেব