بوابه: ? fartsچه বিশেষ যত্ন করিয়াছিলেন বলিয়াই দারোগা বাবর সে নিদ্রা মহানিদ্রা হয় নাই । জাগ্রত হইয়া তিনি মেজেটের সাহেবের নিকট সমুদায় বক্তাত বৰ্ণন করিলেন । এদিকে ডাক্তার সাহেব বোতল পরীক্ষা করিয়া বলিলেন, “বোতলে সরো ও অহিফেন ছিল ।" রামধনের হাজত হইল। কিন্তু রামধন নিদোষিতার প্রমাণ দিয়া খালাস হইয়া আসিল । সে মদের সহিত কিছুই মিশ্রিত করে নাই। তবে কে করিল ? এই গোলযোগের সময় শশিভূষণের বাটীর নিকট একটি লোক ডাক্টারি করিত। সে কহিল, "রমেশ বাব এক দিন রাত্রে পেটের পীড়া হয়েছে বলে লডেনম ( অহিফেনের আরক ) লইয়া গিয়াছিলেন। রমেশ বাব নগদ মাল্য দেন নাই, এ জন্য তাঁহার খাতায় তাঁহার নামে চারি আনার লডেনমের খরচ লেখা রহিয়াছে।” এই কথা প্রকাশ হইবা মাত্র থানায় খবর হইল । তিন দিবস পরে তাহার নামে কৃষ্ণনগরে গিয়া সাক্ষ্য দিবার হািকম আসিল । ডাষ্ট্রার কৃষ্ণনগরে গিয়া সাক্ষ্য দিল যে, অমুক দিবস রাত্রে রমেশ পেটের পীড়া হইয়াছে বলিয়া চারি আনার লডেনম লইয়াছিল । তারিখ ঐক্য করায় প্রকাশ হইল যে, সেই রাত্রেই দীনবন্ধ বাবা অজ্ঞান হন । রমেশের ভরা সম্পণে বোঝাই হইল । রমেশের নানাবিধ দোষ বাহির হইতে লাগিল। প্রথমতঃ গদাধরের সহিত নোট চরি, পরে উৎকোচ গ্রহণ, তদনন্তর উৎকোচ লইয়া প্রমদা ও তাঁহার জননীকে ছাড়িয়া দেওয়া, দীনবন্ধ: বাবকে সরার সহিত আফিং সেবন করান, হয় ত ইহাতে দীনবন্ধ বাবর মৃত্যু হইতে পারিত । এই সমস্ত দোষ একত্র হওয়ায় রমেশ পলিসের লোক হইয়াও আর কথা কহিতে পারিল না। জজ সাহেব জিজ্ঞাসিলেন, "তোমার কোন ছল আছে ?" রমেশ অধোবদনে নীরব হইয়া রহিল । তদশনে জরিরা তাহাকে সমুদায় অপরাধেই দোষী করিলেন। অনন্তর জজ সাহেব তাঁহাকে যাবজ্জীবন দ্বীপান্তরের হতুকম দিলেন। চতুশ্চত্বারিংশ পরিচ্ছেদ এই হলো দুঃসহ মনঃকটে গোপাল রজনী অতিবাহিত করিলেন । তাঁহার নিকট সে রাত্রি অবসান হয় না। এক এক দণ্ড যেন এক এক প্রহরের ন্যায় বোধ হইতে লাগিল । রজনীকে শান্তিদায়িনী বলিয়া লোকে ব্যাখ্যা করে, কিন্ত তিনি কাহাকে শান্তি প্রদান করেন ? যাহারা মনাগমনে দগধ হইতেছে, তাহাদিগকে না ; যাহারা শয্যাগত রোগী, তাহাদিগকে না ; যাহারা দীন দুঃখী, তাহাদিগকে না ; এ সমস্ত লোকের চিন্তাক্লেশ যামিনীযোগেই বন্ধি হয়। রজনী সমাগত হইলেই ইহারা আপন আপন মনের হতাশনে দগধ হইতে থাকে। যাহারা দগধফেনসন্নিভ পব্যঙ্কোপরি শয়ন করিয়া থাকে, অনবরত দাস দাসী যাহাদিগকে ব্যজন করে, রতি
পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১৭৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।