পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণলতা : ১৭২ নাবিকের কথা শুনিয়া গোপাল উঠিয়া দাঁড়াইয়া দীঘনিশ্বাস পরিত্যাগপবেক কহিলেন, “তবে এখনও জীবিত আছে।" পরে আগ্রহ সহকারে জিজ্ঞাসিলেন, *সে গ্রীলোক দটি কোথায় গিয়েছে ?" নাবিক কহিল, "শশাকশিকর ঠাকুরের চাকরাণীর মাসীর বাড়ী গিয়েছে।" গোপাল কহিল, “এ আংটিটির দাম অতি কম হ’লেও ত্রিশ টাকা হবে । তোমরা কেউ যদি আমাকে সেই বাড়ী রেখে আসতে পার, তবে আমি আর পাঁচ টাকা দি ” চারি জন নাবিক সকলেই কহিল, “আমি যাব, আমি যাব।” যে সবণলতাকে পার করিয়াছিল, সে কহিল, "তোরা কেউ যেতে পাবি নে। আমি সে বউটিকে পার করিছি, তার সোয়ামিকেও পার করবো ।” নাবিক কেন সবণকে বউ মনে করিল, আর গোপালকেই বা কেন সবণের স্বামী ভাবিল, তাহা সেই নাবিকই জানে | গোপাল তাহার সঙ্গে সঙ্গে গেলেন । পার হইয়া নাবিক তাঁহাকে পথ প্রদর্শন করাইয়া লইয়া চলিল । খানিক দর গিয়া নাবিক কহিল, “ঐ সে বাড়ী ৷ আমার বকশিশ দাও।” গোপাল নাবিককে যে পাঁচ টাকা দিবেন বলিয়াছিলেন, তাহা তদন্ডে প্রদান করিলেন । পরে দুই চারি পা সম্মখে গিয়া সবণলতা ও তাঁহার কাছে আর একটি সত্ৰীলোককে দেখিতে পাইলেন। গোপাল দতপদে তথায় গিয়া, "বণ” বলিয়া ডাকিলেন । এবং সবণ তাঁহার নিকটে না আসিতে আসিতেই অজ্ঞান হইয়া ভুতলে পতিত হইলেন । পঞ্চচত্বারিংশ পরিচ্ছেদ এই হইয়াছে চেতনা পাইয়া গোপাল দেখলেন, তিনি সবণ লতার জানার উপর শির পথাপন করিয়া শয়ন করিয়া আছেন। সবণলতা দক্ষিণ হস্ত দ্বারা তালবন্ত ব্যজন করিতেছেন এবং শশাঙ্কের দাসী নিকটে ঘটিতে জল লইয়া দাঁড়াইয়া আছে। তিনি চক্ষরন্মীলন করিলে সবণ জিজ্ঞাসা করিলেন, “এখন কেমন আছ ? একটু ভাল বোধ হচ্ছে কি ?" গোপাল কহিলেন, “আমি কোথায় আছি ?” সবণ” উত্তর করিলেন, “তুমি আমার কাছে আছ, আমি সবণী ; এখন কি একটু ভাল বোধ হচ্ছে ?” গোপাল যেন সমুদায় সমরণ করিয়া লইবার জন্য একট চাপ করিয়া রহিলেন, পরে কহিলেন, “আমি ভাল হইছি।” গোপাল বর্ণলতার জান হইতে শির উত্তোলন করিলেন। গোপালের মনে