পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণলতা : ১৭৪ সমভিব্যাহারে লইয়া গোপাল বারাকপুর স্টেশনে গিয়া রেলওয়ে উঠিলেন । অবিলবে শিয়ালদহে পৌছিলেন এবং তথা হইতে গাড়া করিয়া বকফুলতলা স্ট্রীটে হেমের বাসায় উপস্থিত হইলেন । হেম এক্ষণে চলিয়া বেড়াইতে পারেন । সকালে গাত্ৰোখান করিয়া বারাণ্ডায় বসিয়া আছেন, এমন সময়ে গাড়ী গিয়া দ্বারে উপনীত হইল । গোপাল আগ্নে বাহির হইলেন, হেম হস্ত প্রসারণপৰব'ক গোপালের হস্ত ধরিয়া কহিলেন, “তোমার ভবানীপরে কি এমন কৰ্ম্ম ছিল যে, আজ তুমি তিন দিন সেইখানেই বসে আছ ?” গোপাল কথা, কহিবেন, এমন সময় গাড়ীর অভ্যন্তর হইতে শশাঙ্কের দাসী ভূমে অবতরণ করিল। হেম জিজ্ঞাসিলেন, “এ আবার কে ?" হেমের প্রশন শেষ হইতে না হইতে সর্ণলতা নামিলেন । হেম পৃষবাপেক্ষা আশ্চৰ্য্য হইয়া কহিলেন, "প্লবণ কোথা হ’তে এলে ? এস দিদি এস।” এই বলিয়া হেম সবণের কাছে গেলেন। সবণ কাঁদিতে কাঁদিতে হেমের হস্ত ধারণপ্ৰধক গহের মধ্যে আসিলেন । এক দিবস গোপাল ও হেম একত্র বসিয়া আছেন । হেম এক্ষণে সম্পণ" আরোগ্য হইয়াছেন । গোপালের চেহারা কিন্তু আর পর্বের মত নাই। হেম এত দিনের পর ইহার কারণ জানিতে পারিলেন, জানিতে পারিয়া হেমের যার-পরনাই আহলাদ হইল। তিনি দেখিলেন যে, উভয়ের অনুরাগ উভয়ের প্রতি সমান, ইহাদিগের বিবাহ হইলে পরমসুখে কাল যাপন করিবে । হেম ক্ষণকাল নীরবে থাকিয়া ঈষৎ হাস্য করিয়া কহিলেন, "গোপাল, তোমাকে একটা কথা বলতে ইচ্ছা হচ্ছে ।” গোপাল জিজ্ঞাসিলেন, “কি কথা ?” হেম কহিলেন, “তোমার সেই—বৎসরকার প্রজার সময়ের কথা মনে পড়ে ?” গোপাল কহিলেন, "হাঁ, পড়ে।” হেম কহিলেন, "আচ্ছা, এক দিন তুমি আর আমি দালানের রোয়াকে বসেছিলাম, এমন সময়ে বাবা এসে তথায় বসলেন এবং একট পরেই বর্ণলতার বিবাহের কথা উত্থাপন করলেন । সে কথা তোমার মনে আছে ?” গোপাল কহিলেন, "হাঁ, আছে ।” হেম । “সবণলতার বিবাহের কথা উত্থাপন হ’লে তুমি তথা হতে চলে যাচ্ছিলে । বাবা বল্লেন, তোমার উঠবার প্রয়োজন নাই, কিন্ত আমি বল্লাম, তোমার শরীর অসুস্থ আছে ৷ উঠে যাওয়াই ভাল। তাই শনে তুমি মুখ বাঁকিয়ে উঠে গেলে । সে কথা মনে পড়ে ?” গোপাল লজ্জাবনতমুখে উত্তর করিলেন, “পড়ে ।” হেম কহিলেন, "আচ্ছা, এখন বলো দেখি, আমি উঠে যাওয়ার পোষকতা