পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চচত্বরিংশ পরিচ্ছেদ : ১৭৫ করেছিলাম কেন ?" গোপাল । আমি বলতে পারলাম না। হেম কহিলেন, “পারলেও তুমি বলবে না। আমি বলি শোন । তোমার সহিত সবণের বিবাহ দেবার প্রস্তাব করবো ব'লেই তোমাকে আমি সরায়ে দিলাম । তুমি মুখ বক্র করলে, তা আমি দেখেছিলাম। কিন্ত কিছু বল্লাম না।” গোপালের মুখ লাল হইয়া উঠিল । তিনি মাটির দিকে চাহিয়া রহিলেন । হেমচন্দ্র কহিলেন, “তোমার সহিত বণের বিবাহ দিতে বাবার এক মাত্র আপত্তি এই ছিল যে, তোমার ধন নাই । গোপাল, রাগ ক'রো না । আমি আমার কথা বলছি না । বাবা যা মনে করতেন, তাই বলছি । তাঁহার এক মাত্র আপত্তি এই ছিল যে, তোমার ধন নাই । তিনি যদি বেচে থাকতেন, তা হ’লে এত দিন আমি তোমার সহিত সবণের বিবাহ দেওয়াতাম । তাঁর কাল হয়েছে বলেই তোমাদের বিবাহের দেরি হয়ে পড়েছে। এখন আমার কথা এই, যদি কোন আপত্তি না থাকে, তবে তোমার পিতাকে চিঠি লিখে আনিয়ে তুমি সবণের পাণিগ্রহণ কর।” হেমের কথা শুনিয়া গোপালের চক্ষ হইতে বাপবারি বিগলিত হইতে লাগিল । তাঁহার কন্ঠ রোধ হইয়া আসিল । গোপাল কথা কহিতে চেণ্টা করিলেন, কিন্ত কৃতকাৰ্য্য হইতে পারিলেন না । হেম কহিলেন, “আর তোমার কথায় কাজ নাই, আমি সব বুঝেছি । এখন তোমার বাপকে পত্র লেখ ।” গোপাল ও সবণলতার বিবাহ হইয়াছে । শশিভূষণের মোকদ্দমা নিম্পত্তি হইয়া গিয়াছে । সত্য কথা বলিয়াছিলেন বলিয়া শশিভূষণ অব্যাহতি পাইয়াছেন । মহেনরি, হিসাবনবিস ও খাতাঞ্জি, প্রত্যেকেরই কারাবাসের আদেশ হইয়াছে । শশিভূষণের সমুদায় সম্পত্তি বিক্রয় হইয়া গিয়াছে। এক্ষণে বিপিন, কামিনী ও তিনি গোপালের বাটীতে থাকেন । প্রমদা পিরালয়ে থাকেন । কিন্ত তাঁহার ভরণপোষণের ব্যয় গোপালকে দিতে হয়। এ জন্য গোপাল তাঁহাকে নিজ বাটী আনিবার জন্য যত্ন পাইয়াছিলেন। কিন্ত: শশিভূষণ তাঁহাকে সে যত্ন হইতে নিরস্ত করিলেন । পিত্রালয়ে প্রমদার কাহারও সহিত বাক্যালাপ নাই। সকলেরই সহিত কলহ করিয়াছেন। কেবল মাত্র তাঁহার মাতার সহিত মাঝে মাঝে কথা কহেন। বিধভষণ ডেপুটী কলেক্টর বাবরে নিকট হইতে আসিয়া বাটী বাস করিতেছেন । তাঁহার অলপ বয়সেই সমুদায় কেশ শুরু হইয়াছে। তাঁহাকে এক্ষণে শশিভাষণ অপেক্ষা বয়সে জ্যেষ্ঠ দেখায়। বৰ্ণলতার একটি পত্র হইয়াছে। বিধভষণ সমস্ত দিবস সেই পত্রটিকে ক্লোড়ে লইয়া খেলা দেন। সবণলতা আদর করিয়া পত্রটির নাম ন্যাপাল রাখিয়াছেন। হেমচন্দ্র বৎসরের মধ্যে ছয় মাস সবণলতার বাটীতে আসিয়া থাকেন। তিনি