পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণলতা : ১৪ শান্তিদায়িনী আর সংসারে কিছুই নাই। নিদ্রা মনের প্রিয়তমা সহচরী। চিন্তাদগধ চিত্তকে নিদ্রা সখীর ন্যায় সস্থ করে। কিন্তু দুঃখীর সখ কোথাও নাই । চিরদুঃখিনীর ভাগ্যে করুবন নিদ্রার অরি হইয়া তাহাকে শান্তিসখ হইতে বঞ্চিত করে । 'সরলা পত্রটি কোলে করিয়া শয্যায় নিদ্রিত আছেন। মস্তকের নিকট জানালার উপর একটি তৈলের প্রদীপ জলিতেছে ; বাতাসে দীপশিখা অলপ অলপ নাড়িতেছে, এ জন্য মুখখানি মাঝে মাঝে ভাল দেখা যাইতেছে না । বাতাস বন্ধ হইলে আবার সন্দের দেখাইতেছে । মস্তকের বসন বাম পাবে পড়িয়াছে । কপালে বিন্দ বিন্দ ঘন্ম স্থানে স্থানে একত্রিত হইয়া মুক্তার ন্যায় শোভা পাইতেছে । লোহিত ওঠ দুটি অলপ অলপ কম্পিত হইতেছে । মুখভঙ্গি চিন্তাশন্যে বোধ হইতেছে না । নিদ্রিত হইয়াও কি সরলা ভাবিতেছেন ? নিদ্ৰা ভংগ হইলে সরলা দেখিলেন—রজনী শেষ হইয়াছে এবং গোপালের হস্ত ধারণ করিয়া শয্যা হইতে উঠিয়া বাহিরে আসিলেন। ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ ঠাককণদিদি পাঠকবগের সমরণ থাকিতে পারে, ইতিপবে দিগম্বরী ঠাকরণদিদির কথা উল্লেখ করা গিয়াছে। এক্ষণে তাঁহার সহিত আপনাদিগের বিশেষ পরিচয় করিয়া দেওয়া আবশ্যক হইতেছে । শশিভষেণের বাটীর দশ বার রশি পশ্চিমে তাঁহার বাটী। ঠাকরণদিদির দুইখানি ঘর ; একখানি থাকিবার ও আর একখানি রন্ধনশালা । সম্মখে ছোট একটা উঠান, উঠানের দক্ষিণে ছোট একট বাগান । বাগানের মধ্যে গুটিকতক ফলগাছ, একটি কি দুটি পোপের গাছ, আর একটি নারিকেলগাছ । বাড়ীখানি এমনি পরিকার যে, সিন্দরটকে পড়িলে তুলিয়া লওয়া যায়। এই বাটীতে ঠাকরণদিদি “বিকলেপ” একাকিনী বাস করেন । ঠাকরণদিদির রপে-গণের পরিচয় দেওয়া বড় সহজ নয়। তাঁহার বণটি জবা ফলের মত নয়, গোলাপ ফলের মত নয়, বেল ফলের মত নয়, মলিকা ফলের মত নয়, আয়েশার মত নয়, আশামানির মত নয়, প্রদীপের আলোকের মত নয়, মোমবাতির মত নয়। এ সমস্ত মিশ্রিত করিলে যেমন হয়, তাহার মতও নয় । কেমন, পাঠকবগ বঝেছেন ত, এখন ঠাকরণদিদির বণটি কেমন ? যদি না বঝিয়া থাকেন, তবে পস্তেকখানি এইখানেই বন্ধ করন। "নবেল" পড়া আপনার কাজ নয়। গ্রন্থকারদিগের ইহা অপেক্ষা সপণ্ট করিয়া কোন বিযয় বর্ণনা করিবার নিয়ম নাই। আর যদিও ইহা অপেক্ষা স্পষ্ট করিয়া কোন বিষয় বর্ণনা করেন, তাহা হইলে তাঁহাদের কি ক্ষতি? আপনাদের বন্ধির পথলত্ব প্রকাশ পায় । অতএব যদি আপনারা অল্পবধি” এই গালটি স্বীকার করিয়া লইতে পারেন,