পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बर्छ ऋब्रिट्झन् : s4 তবে আমি কেবল মাত্র বণ কেন, ঠাকরণদিদি সম্বন্ধে যাহা কিছ জানি, সকলই বর্ণনা করিতে পারি। ঠাকরণদিদির বণ কোন কোন জিনিসের মত নয়, তাহা বলা হইয়াছে ; কোন কোন জিনিসের মত, তাহা এক্ষণে বলা কৰ্ত্তব্য । অথাৎ জমিদারী সেরেস্তার কালি, রান্নাঘরের ঝল, আলকাতরা ইত্যাদির ন্যায় । ঠাকরণদিদি বেটে, পথলেকলেবরা ; মস্তকটি প্রায় কেশশন্যে, দাঁতগুলি মাঘ মাসের মলার মতন, চক্ষ দুটি রক্তবণ, পদদ্বয় মতভোকার, পায়ের অৎগলিগুলি এখানে একটি ওখানে একটি, যেন পরপর বিবাদ করিয়া পৃথক হইয়াছে । ঠাকরণদিদি তাঁহার পিতার বড় আদরের মেয়ে ছিলেন, এ জন্য দশ বার বৎসর বয়ঃক্ৰম পৰ্য্যন্ত তাঁহাকে ব্যাটাছেলের মত কাপড় পরাইর সঙ্গে সঙ্গে সহবরই লইয়া যাইতেন । ঠাকরণদিদিকে না চিনিত, এমন লোকই ছিল না ; ঠাকৰূ"দিও সকলকেই চিনিতেন। আপাততঃ তাঁহার প্রায় চলিলশ বৎসর বয়ঃক্ৰম "জন্মাবধি বিধবা বলিলেই হয়। বিবাহ হইয়া এত অলপ দিনের মধ্যেই তাঁহার স্বামীর পরলোকপ্রাপ্তি হয় যে, তিনি ক'দিন সধবা ছিলেন বলা বড় দুঃসাধ্য। ঠাকরণেদিদি বৈধব্যাবস্থায় একবার বশরেবাড়ী গিয়াছিলেন। তিন চারি দিবসের মধ্যেই কলহ বিবাদ করিয়া তথা হইতে পিত্রালয়ে ফিরিয়া আইসেন। তাঁহার পিতার কিঞ্চিৎ অথ ছিল, এক্ষণে ভাহাতে জীবিকা নিৰবহি হয় । ঠাকরণদিদির এই এক অসাধারণ গণ ছিল যে, তাহার বাটীতে যে কেহ যাউক না কেন, কাহাকেও অনাদর করিতেন না । সকলকেই সমভাবে যত্ন করিতেন । প্রত্যুষে যেমন সরলা গোপালের হস্ত ধারণ করিয়া বাহির হইবেন, সম্মুখে ঠাকরণদিীদকে দেখিতে পাইয়া অমনি গৃহমধ্যে পুনঃপ্রবেশ করিলেন। ঠাকরণদিদি অপর দিকে মুখ ফিরাইয়া প্রমদার ঘরের দিকে চলিয়া গেলেন । অবিলবেই সরলা বাহির হইয়া দেখিলেন, ঠাকরণদিদি প্রমদার গহে প্রবেশ করিলেন । সরলার গহ হইতে প্রমদার গহ এক প্রাচীর মাস ব্যবধান ; এ জন্য তিনি নিজ গ্যহে থাকিয়া কি কথোপকথন হয়, শনিবার চেষ্টা করিলেন , কিন্তু কিছই শুনিতে না পাইয়া পুনরায় বাহিরে আসিয়া সংসারের কাজকমে প্রবত্ত হইলেন । প্রায় এক ঘণ্টা কাল পর্য্যন্ত পরামশা করিয়া ঠাকরণদিদি প্রমদার ঘর হইতে বাহির হইয়া আসিলেন এবং সরলাকে ডাকিয়া কহিলেন, "একটা কথা শনে যাও ।” - সরলা সশঙ্কিত হইয়া ঠাকরণদিদির নিকট অগ্রসর হইয়া কহিলেন, “ক ?” ঠাকরণদিদি কিঞ্চিৎ কৃত্রিম দুঃখ প্রদর্শন করিয়া কহিলেন, “কথা এই ভাই— আমার দোষ নাই—আমি কি করব ভাই--আমাকে তুমি এক কথা বলে পাঠালে প্রমদার কাছে বলতে হবে, আর তিনি এক কথা বলে পাঠালে তোমার কাছে বলতে হবে । আমাকে ভাই গালি দিও না, আমি হয়েছি সীতাহরণে মারীচ—”