পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণলতা : ১৮ সপ্তম পরিচ্ছেদ যেখানে ভাই ভাই, সেখানে ঠাই ঠাই শ্যামা,যে যথার্থই বিধভযেণকে ডাকিতে গিয়াছিল, বিধরে তাহা প্রত্যয় হয় নাই । তিনি মনে করিলেন, শ্যামা যাত্রা শুনিতে গিয়াছিল, পথে তাঁহার সহিত দেখা হইয়াছে বলিয়া ও কথা কহিল। আস্তে আস্ত্রে বাটীর অভ্যন্তরে প্রবেশ করিলেন। বাহির-বাটীতে কাহাকেও দেখিতে পাইলেন না । ভিতরে প্রবেশ করিলেন, কেহই নাই । রান্নাঘরের বারে দড়িাইয়া দেখিতে পাইলেন ঠাকরণদিদি পাক করিতেছেন । বিধ ঈষৎ হাস্য করিয়া কহিলেন, “আজ কি সপ্রভাত ! স্বয়ং লক্ষী ঘরে বিরাজশান ।" বিধ ঠাকরণদিদিকে এই রাপেই সম্ভাষণ করিতেন। ঠাকরণদিদিও তাহাতে কখনই তন্টে ভিন্ন রটে হইতেন না । আপাততঃ ঠাকরণদিদি কথা কহিলেন না। বিধ কহিলেন, "তৃষিত চাতক বাক্যসন্ধা যাচঞা করিতেছে ; কথা কহিয়া তৃষ্ণা দরে করে " ঠাকরণদিদি তথাপি কথা কহিলেন না, মখ ভারি করিয়া রহিলেন। বিধ যাত্রার দলে বাক্তাইরা পরম আহলাদত ছিলেন । ঠাকরণেদিদির মুখভঙ্গির প্রতি লক্ষ্য না করিয়া করপটে কহিলেন, "দীন জনকে কট দেওয়া মহতের উচিত নহে। তবে যদি আমার কোন দোষ হয়ে থাকে, ব্যবস্থা ত পড়েই আছে । ‘অপরাধ করিয়াছি, হাজরে হাজির আছি, ভজপাশে বধি কর দন্ড’ ।” t ঠাকরণদিদি তথাপি কথা না কহায় বিধর মনে সন্দেহ জন্মিল। শ্যামা তাঁহাকে ডাকিতে গিয়াছিল, তাহাও সমরণ হইল। মনে করিলেন, শ্যানার কথা কাল্পনিক নহে। অবিলবে তথা হইতে প্রস্থান করিয়া নিজের গহে প্রবেশ করিলেন । সরলা তাঁহার কথা শুনিয়াই দুঃখে ও ভয়ে অশ্রপাত করিতেছিলেন । সরলাকে তদবপথ দেখিয়া বিধর যেন কাঠবরোধ হইয়া আসিল । মহত অগ্নে হাসিতেছিলেন, হাসি দরে হইল, সৰবৰিগ কম্পিত হইতে লাগিল। ক্ষণেক সতখ হইয়া থাকিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “গোপাল কোথায় ? সে ভাল আছে ত ?” সরলা কহিলেন, "গোপাল পাঠশালায় গিয়াছে, ভয় নাই—গোপাল ভাল আছে ।” বিধ । বিপিন, কামিনী ? সর । বিপিনও পাঠশালার গিয়াছে। কামিনী কোথায় খেলা করছে । বিধ । তবে তুমি কদিছ কেন ? সর। ঠাকর আমাদের পথিক ক’রে দিয়েছেন । বিধ । এই কথা ? এরই জন্যে এত কাণ্ড ? কি বলে দাদা আমাদের পথিক ক'রে দিয়াছেন ?--বিধার বোধ হইল, যেন ইহা অপেক্ষা আর কিছুই অসম্ভব । হইতে পারে না । সরলা কহিলেন, "প্রথমে ঠাকরণদিদিকে দিয়ে বলে পাঠালেন, পরে কাছারি