পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণলতা : ২ a “হাঁ”—এই বলিয়া সরলা শ্যামার নিকট প্রাতঃকালের ঘটনার পরিচয় দিলেন । শ্যামা পুনরায় হাসিতে হাসিতে জিজ্ঞাসা করিল, "তবে আমি কোন দিকে যাব ? ভাগগি আমি বাবদের মা নই ৷ মা হ’লে ত আমার গংগা পাওয়া ভার হ’ত । কিন্তু সাজার দাসীর কি হয়, তা ত জানি নে । হাঁ খড়ী-মা, কি হয় জান কি ? সরলা কিঞ্চিৎ বিরক্ত হইয়া বলিলেন, “তোর আর হাসি আমার ভাল লাগে না । দ-দণ্ড কাল কি তই না হেসে থাকতে পারিস না ? সরলার কথা শেষ না হইতে হইতেই বিপিন ও গোপাল পাঠশালা হইতে বাটী আসিল । গোপাল আসিয়া সরলার নিকট “মা, কি খাব" বলিয়া উপস্থিত হইল । সরলা অঞ্চল দিয়া গোপালের মুখের কালি পুছিয়া দিয়া কহিলেন, “একটু দেরি করো, খাবার দেবো এখন । বিপিন মায়ের নিকট একটি সন্দেশ পাইল । প্রমদা সন্দেশটি বিপিনের হাতে দিয়া কহিলেন, “এইখানে ব’সে খাও । না খেয়ে বাইরে যেও না ।” বিপিন তাহ শুনিবে কেন ! সন্দেশটি পাইবা মাত্রেই ঘরের বাহিরে আসিয়া গোপালকে ডাকিল । গোপাল বাহিরে আ:ি:া দেখিল, বিপিন সন্দেশ থাইতেছে । দেখিয়া জিজ্ঞাস করিল, “দাদা, ৯আমারে একটু দেবে ?" বিপিন উত্তর করিল, “না, ভাই, দিলে মা বকবে ।" গো । মা কেন বকবে । অামি যখন : পাই তোমাকে দি, তাতে ত আমার মা কিছু বলেন না । বি । আমি ভাই এখন দিতে পারব না । আমি বড় হ’লে দেবো । গো । আমিই কি চিরকাল ছোট থাকব ; বড় হ’লে আমি আর তোমার কাছে চাব না —এই কথা কহিতে কহিতে উভয়েই রান্নাঘরের নিকট গেল । বিপিন এ দিক ও দিক চাহিয়া দেখিল—কেহ কোনখান হইতে দেখিতেছে না, তখন সন্দেশটি ভাঙ্গিয়া একটু গোলাপের হাতে দিতে গেল । ঠাকরণদিদি রান্নাঘর হইতে দেখিতে পাইয়া কহিয়া উঠিলেন, “বিপিন, বিপিন, থামে । আমি দেখতে পাচ্ছি ; মাকে বলে দেবো এখন ।” বি । তুমি কি বলে দেবে ? আমি ফু কারকে সন্দেশ দিই নি –এই বলিয়া গোপালকে না দিয়া সন্দেশটােক আপনার মুখে নিক্ষেপ করিল । গোপাল শলানমখে মায়ের নিকট ফিরিয়া আসিল । শ্যাম৷ ইত্যবসরে দোকান হইতে একটি সন্দেশ আনিয়াছিল । গোপাল আসিবা মাত্রেই তাহার হাতে দিল । গোপাল হাটচিত্তে সন্দেশ খাইতে খাইতে বিপিনের সঙ্গে গিয়া মিশিল । বিধভষেণ স্নান করিয়া বাটী আসিলেন । শশীভুষণও কাছারি হইতে প্রত্যাগমন করিলেন । ক্লান্ত হইয়া আসিয়াছেন বলিয়া বিধ আপাততঃ তাঁহাকে কিছ: বলিলেন না । শশিভূষণ সনানাহিক মন্থন করিলেন । পাকশাক প্রস্তুত করিয়া ঠাকরণদিদি সৰু কুরিয়া শশিত"Nসাহার করিতে ডাকিলেন।